Tuesday, April 15, 2025
spot_imgspot_img
Homeআন্তর্জাতিকট্রাম্পের শুল্ক নীতিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির নতুন সম্ভাবনা

ট্রাম্পের শুল্ক নীতিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির নতুন সম্ভাবনা

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীন ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের যে নীতি গ্রহণ করেছেন, তা বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হতে পারে বলে আশা করছেন স্থানীয় পোশাক রপ্তানিকারকরা।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আমেরিকার ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতারা চীন থেকে ক্রয়াদেশ কমিয়ে দিচ্ছে এবং সেই আদেশগুলো বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হচ্ছে। চীনের পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করায় ভবিষ্যতে আরও বেশি ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন রপ্তানিকারকরা।

দামের প্রতিযোগিতা, উচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মানোন্নয়ন বাংলাদেশের প্রতি আমেরিকান ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাকের ওপর ১৫ দশমিক ৬২ শতাংশ শুল্ক থাকা সত্ত্বেও এ খাতটি ক্রমাগত শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখেছে।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র স্বল্পোন্নত দেশগুলো থেকে ৯৭ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করে, তবে বাংলাদেশের পোশাক পণ্যের ক্ষেত্রে এ সুবিধা কার্যকর নয়। এ বিষয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন রপ্তানিকারকরা।

হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ বলেন, “চীন ও মেক্সিকোর ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ বাংলাদেশে নতুন বাজার সৃষ্টি করবে। চীন ও মেক্সিকো থেকে কার্যাদেশের একটি বড় অংশ বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে স্থানান্তরিত হতে পারে।” তবে এ সুযোগ কাজে লাগাতে শিল্পখাতে গ্যাস ও বিদ্যুতের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ডিবিএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ জব্বার জানান, “ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির ফলে ক্রেতারা বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। সম্প্রতি কিছু ক্রয়াদেশ মেক্সিকোতে চলে গিয়েছিল, কিন্তু এখন তা বাংলাদেশে ফিরে আসছে।” তবে শিল্পকারখানাগুলো পূর্ণ উৎপাদনে চালাতে পর্যাপ্ত জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে। চীন ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করলে বাংলাদেশের রপ্তানি কার্যাদেশ বৃদ্ধি পাবে এবং ওই দেশগুলোর কিছু বিনিয়োগও বাংলাদেশে স্থানান্তর হতে পারে।

২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়। তবে এরপর বাংলাদেশ কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মান উন্নয়নসহ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে, যা আমেরিকান ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের আস্থা পুনরুদ্ধারে সাহায্য করেছে।

পোশাক শিল্পের এ সম্ভাবনা বাস্তবায়নের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সংশ্লিষ্ট খাতে দ্রুত বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments