বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি বলেছেন, ঋণের সুদহার বাড়লেও ব্যবসায়ীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান এই মন্তব্যকে বাস্তবতার সঙ্গে অমিল হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং ব্যবসায়ীদের বর্তমান চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নরের এই বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য। একটি ফেসবুক পোস্টে সেলিম রায়হান উল্লেখ করেন, “ঋণের সুদহার বৃদ্ধির উদ্দেশ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা হলেও, এটি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন সমস্যা তৈরি করতে পারে।” তাঁর মতে, ঋণের সুদহার বৃদ্ধির ফলে ব্যবসায়িক খরচ বাড়ছে, বিশেষত ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসাগুলো আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উচ্চ সুদহারের কারণে ব্যবসাগুলোর নগদ প্রবাহে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে এবং পরিচালনার খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ব্যবসায়ীরা ঋণ পরিশোধে সক্ষম না হলে, নতুন প্রকল্প বা সম্প্রসারণে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমে যেতে পারে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি শ্লথ করবে এবং কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।গভর্নরের বক্তব্যে যে সাফল্য আশা করা হচ্ছে, তা বাস্তব পরিস্থিতিতে কার্যকর হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন সেলিম রায়হান। তিনি আরও বলেন, সুদের হার বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে খুব বেশি কার্যকর হচ্ছে না, কারণ মুদ্রানীতি, রাজস্বনীতি এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। বাংলাদেশের মুদ্রানীতি শুধুমাত্র সুদের হার বৃদ্ধি করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে, কিন্তু একে কার্যকর করার জন্য যথাযথ রাজস্বনীতি এবং বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। যদি সরকার মুদ্রানীতির সঙ্গে বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তাহলে শুধু সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।সবশেষে, সেলিম রায়হান বলেন, গভর্নরের মন্তব্য বাস্তব পরিস্থিতি ও অর্থনীতির প্রেক্ষাপটের সঙ্গে মেলেনা, এবং ব্যবসায়ীদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।