মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি প্রস্তাব করেছেন, ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে সরিয়ে মিশর ও জর্ডানে পাঠালে মধ্যপ্রাচ্যের সংকটের সমাধান হতে পারে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্রের দুই মিত্র দেশ—মিশর ও জর্ডান বড় বিপদের সম্মুখীন হতে পারে।
শনিবার এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্প বলেন, গাজা-ইসরায়েল সংঘাতে গাজার পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। তিনি ফিলিস্তিনিদের জন্য মিশর ও জর্ডানে “সাময়িক” বা স্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করার কথা বলেন। ট্রাম্পের মতে, এভাবে গাজার ভূখণ্ড “পরিষ্কার” করলে দীর্ঘদিনের সংঘাত নিরসন সম্ভব।
জর্ডান ইতোমধ্যেই ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, তারা নতুন কোনো শরণার্থী গ্রহণ করবে না। তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনিদের জন্য তাদের নিজ ভূমিই নির্ধারিত। একইভাবে মিশরও ফিলিস্তিনিদের সিনাই মরুভূমিতে পাঠানোর যেকোনো পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ওরাইব রানতাউই মনে করেন, এই পরিকল্পনা জর্ডান ও মিশরের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ। তিনি এটিকে আরব দেশগুলোর মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের অধিকার হরণ করার প্রচেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করেন। বিশ্লেষকরা এটিকে ১৯৪৮ সালের “নাকবা”-র স্মৃতি ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা বলে মনে করেন।
জর্ডানের বিরোধীদলীয় নেতা সালেহ আল-আরমৌতি ট্রাম্পের প্রস্তাবকে “যুদ্ধ ঘোষণার সমতুল্য” বলে মন্তব্য করেছেন। জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ এই উদ্যোগকে “রেড লাইন” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নযোগ্য নয় এবং এটি মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা আরও নাজুক করে তুলতে পারে।