শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ড: ২০ বছর পরও সুষ্ঠ বিচারের অপেক্ষা
আজ ২৭ জানুয়ারি, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যাকাণ্ডের ২০ বছর পূর্ণ হলো। এ বিষয়ে তার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া একটি ভয়াবহ অভিযোগ তুলেছেন। যুগান্তরের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি দাবি করেছেন, শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ তিনজন এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, “২০০৫ সালে আমার বাবাকে গ্রেনেড হামলায় হত্যা করা হয়। তার শরীরে প্রায় ৪০০ স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়েছিল। একটি ভাঙা অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়, আর পথেই তার মৃত্যু হয়। আজ ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও আমরা ন্যায্য বিচারের জন্য অপেক্ষায় আছি। আওয়ামী লীগ সরকার কোনো সুষ্ঠু তদন্ত করেনি। কারণ, তাদেরই দলের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত।”
তিনি আরও বলেন, “আমার বাবার হত্যার পেছনে তিনজন এমপি—আবু জাহির, মজিদ খান এবং ডা. মুশফিক চৌধুরীর নাম উঠে এসেছে। এ ছাড়া শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি সালমান এফ রহমান এই হত্যার পুরো অর্থায়ন করেছেন। তার ব্যাংক ও শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারি নিয়ে আমার বাবার অবস্থান তার সঙ্গে শত্রুতার জন্ম দিয়েছিল। এ কারণে সালমান এফ রহমান হত্যার ফান্ডিং করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এসব তথ্যকে সামনে আনা হয়নি।”
তদন্তের দীর্ঘসূত্রতা এবং বিচারহীনতার অভিযোগ
হত্যাকাণ্ডের পর ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো বিচার সম্পন্ন হয়নি। কয়েক দফা তদন্ত শেষে ২০১৫ সালে তদন্তকারী কর্মকর্তা বিএনপি নেতাদের যুক্ত করে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন। কিন্তু কিবরিয়া পরিবারের দাবি, ওই চার্জশিট অসম্পূর্ণ এবং প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে।
২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যেরবাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক জনসভা শেষে ফেরার সময় দুর্বৃত্তরা গ্রেনেড হামলা চালায়। এতে শাহ এএমএস কিবরিয়া ও তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদাসহ পাঁচজন নিহত হন এবং আহত হন ৪৩ জন। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। তবে দফায় দফায় তদন্তের ফলে বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘসূত্রতায় পড়েছে।
ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, “অসম্পূর্ণ তদন্তের ভিত্তিতে সুষ্ঠু বিচার সম্ভব নয়। আমরা বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার হবে। তবে এ সরকারের আমলে তা সম্ভব নয়। আমরা সঠিক বিচারের অপেক্ষায় আছি।”
নিহত কিবরিয়ার পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন, সুষ্ঠু তদন্ত হলে এ হত্যাকাণ্ডের আসল অপরাধীদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে।