বাংলাদেশ রেলওয়ে রানের স্টাফদের আন্দোলন: চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা
বাংলাদেশ রেলওয়ে রার্নিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম শফিকুল আলম, যিনি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানির শ্বশুর, সম্প্রতি ট্রেন চলাচল বন্ধের পক্ষে অবস্থান নেন। এ সিদ্ধান্তের ফলে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হয়।
কেন চলছে আন্দোলন?
রেলপথের পরিচালনায় যুক্ত কর্মী, যাদের “রানিং স্টাফ” বলা হয়, তাদের মধ্যে গার্ড, ট্রেনচালক, সহকারী চালক ও টিকিট পরিদর্শক (টিটিই) আছেন। এই সকল কর্মী প্রায় দুই হাজারের মতো। ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা কিছু সুবিধা পুনর্বহালের জন্য তারা হঠাৎ করে আন্দোলনে নামেন, যার ফলে সোমবার মধ্যরাত থেকে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পূর্ববর্তী আন্দোলন ও সরকারের অবস্থান
২০২২ সালে, শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে, রানিং স্টাফরা কর্মবিরতি পালন করলে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রেল কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেওয়ায় আন্দোলন স্থগিত হয়েছিল। তবে ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর, রানিং স্টাফরা আবার আন্দোলনে নামে এবং তাদের দাবির পক্ষে বিভিন্ন দফায় দাবি জানায়। যদিও রেল কর্তৃপক্ষ তাদের কিছু দাবিতে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তবুও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।
আন্দোলনের নেতৃত্ব ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টতা
এবিএম শফিকুল আলম, যিনি এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তার রাজনৈতিক পটভূমি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত। ২০২৪ সালের ১৬ জানুয়ারি তিনি নিজের ফেসবুকে তার বোনের মেয়ে ডা. ইসরাত বারী তৃণার স্বামী গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে ছবি পোস্ট করেন। এর আগেও তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাকজিল খলিফা কাজলের পক্ষে ভোট চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন।
আন্দোলনের ভবিষ্যত এবং সরকারের অবস্থান
২০২২ সালে রানিং স্টাফদের কিছু বাড়তি সুবিধা বাতিল করা হয়েছিল, তবে পরবর্তীতে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং রেল কর্তৃপক্ষের মধ্যে দরকষাকষির মাধ্যমে কিছু সুবিধা পুনর্বহাল করা হয়। কিন্তু বর্তমানে রানিং স্টাফরা ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা পুরোপুরি সুবিধা পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রেলের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা বহাল রাখা সম্ভব নয়, কারণ অন্য সরকারি কর্মচারীরা এরকম সুবিধা পান না। তবে রেল কর্তৃপক্ষ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং কোনো সুরাহা আসার চেষ্টা করা হচ্ছে, তবে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি।