শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশে পরিবারের ভূমিকা
শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে পরিবারের গুরুত্ব অপরিসীম। পরিবার থেকেই তারা প্রথম ভালোবাসা, নিরাপত্তা ও যত্ন পায়। তবে, প্রতিটি পরিবারের পরিস্থিতি একরকম নয়। কিছু ক্ষেত্রে মা-বাবার সম্পর্ক ভেঙে যায়, যা সন্তানের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।
গবেষণার ফলাফল
এক গবেষণায় দেখা গেছে, শৈশবে মা-বাবার বিচ্ছেদ হলে ভবিষ্যতে সন্তানের স্ট্রোকের ঝুঁকি ৬১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। গবেষণাটি যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক পরিচালনা করেছেন, যেখানে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ১৩,২০৫ জন ব্যক্তির স্বাস্থ্যতথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
- বিচ্ছিন্ন পরিবারের প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রতি ৯ জনে ১ জন স্ট্রোকের শিকার হয়েছেন।
- যাদের মা-বাবা একসঙ্গে ছিলেন, তাদের মধ্যে প্রতি ১৫ জনে ১ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন।
বিচ্ছেদের প্রভাব ও কারণ
গবেষকরা দেখেছেন, এমনকি অন্যান্য স্ট্রোকের পরিচিত কারণ—যেমন ধূমপান, ডায়াবেটিস ও বিষণ্নতা বিবেচনায় নেওয়ার পরও এই ঝুঁকি কমেনি।
গবেষকদের মতে:
- শৈশবে মা-বাবার বিচ্ছেদের ফলে দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়, যা শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
- এই মানসিক চাপ শরীরে স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি করে, যা মস্তিষ্কের বিকাশ এবং স্ট্রেস মোকাবিলার স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে।
- এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ, অনিদ্রা এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যা স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।
গবেষণার গুরুত্ব
গবেষণাটি প্লস ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এবং এটি আগের এক গবেষণার ফলাফল পুনরায় নিশ্চিত করেছে। গবেষকরা মনে করছেন, পারিবারিক ইতিহাসের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা বাড়ানো এবং স্ট্রোক প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব।
গবেষণাটি স্পষ্ট করেছে যে শৈশবের পারিবারিক অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।