জনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা
বিএনপি ঘোষণাপত্র নিয়ে ইতোমধ্যে ১২ দলীয় জোট এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। পর্যায়ক্রমে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্যান্য দল ও সংগঠনের মতামতও নেওয়া হবে। একইসঙ্গে বিএনপি, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করবে বলে জানা গেছে।
ঘোষণাপত্রের মূল দিক
বিএনপি যে খসড়া ঘোষণাপত্র তৈরি করেছে, তাতে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতা এবং ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত রাজনৈতিক ঘটনাবলির পর্যালোচনার ভিত্তিতে প্রণয়ন করা হয়েছে। ঘোষণাপত্রে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানোর পাশাপাশি ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি রোধের প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে।
ঘোষণাপত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, খুন, রাজনৈতিক নিপীড়নের বিষয়গুলোর বিচার, নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন এবং সাংবিধানিক সংস্কারের বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের লুটপাটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে।
ছাত্রদের সঙ্গে মতপার্থক্য
বিএনপির খসড়া ঘোষণাপত্র এবং ছাত্রদের ঘোষণাপত্রের মধ্যে কিছু মতপার্থক্য রয়েছে। যেমন, ছাত্রদের ঘোষণাপত্রে স্বাধীনতা যুদ্ধকে ‘জনযুদ্ধ’ বলা হয়েছে, যেখানে বিএনপি ‘মুক্তিযুদ্ধ’ শব্দটি ব্যবহার করেছে।
এছাড়া, ছাত্রদের ঘোষণাপত্রে সংবিধানের ব্যাপক পরিবর্তনের কথা বলা হলেও, বিএনপি বিদ্যমান সাংবিধানিক কাঠামোর ভিত্তিতেই সংস্কারের পক্ষে। তারা মনে করে, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমেই প্রয়োজনীয় সংস্কার করা উচিত।
ঘোষণাপত্রের গুরুত্ব ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বিএনপির নেতারা বলেছেন, ঘোষণাপত্রটি রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি একটি ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। তবে এর সাংবিধানিক ও আইনি গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য মিত্র দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন।
বিএনপি মনে করে, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সাফল্যের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য একটি যৌথ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা জরুরি। এ কারণেই তারা যুগপৎ আন্দোলনের অন্যান্য শরিকদের মতামত নিয়ে ঘোষণাপত্রটি চূড়ান্ত করবে এবং পরে সরকারকে উপস্থাপন করবে।