কোভিড-১৯ মহামারীর সময়, যখন তৌহিদ এবং তার বন্ধুরা টিকটক ভিডিও দেখে সময় কাটাচ্ছিল, তখন তিনি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার সিদ্ধান্ত নেন। নানা প্রোগ্রামিং ভাষায় দক্ষতা অর্জনের পর, তিনি অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেমন আপওয়ার্ক এবং ফাইভারে কাজ শুরু করেন। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিংয়ের অনিশ্চয়তা তাকে ভাবিয়ে তোলে, যার ফলে তিনি স্থায়ী চাকরি খুঁজছিলেন। একদিন, তার আপওয়ার্কের ক্লায়েন্ট—এক মার্কিন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের সিইও—তাকে ফুল-টাইম রিমোট চাকরির প্রস্তাব দেন।
তৌহিদের মতো তরুণদের রিমোট চাকরির প্রতি আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইন, ইউআই/ইউএক্স ডিজাইন, লেখালেখি, ভিডিও এডিটিং, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্সসহ অন্যান্য কাজ ঘরে বসেই করা সম্ভব। পশ্চিমা দেশগুলো বিশ্বব্যাপী ফ্রিল্যান্সার নিয়োগ করে, যা তাদের জন্য আর্থিকভাবে লাভজনক। এর ফলে বাংলাদেশের দক্ষ কর্মীরা স্থানীয় চাকরির তুলনায় বিদেশি রিমোট কাজ থেকে ভালো পারিশ্রমিক পাচ্ছে এবং তাদের আর্থিক অবস্থানও শক্তিশালী হচ্ছে।
রিমোট চাকরির অন্যতম সুবিধা হলো এর নমনীয় কাজের সময় এবং পরিবারসহ আরও অনেক সময় কাটানোর সুযোগ। একদিকে যেমন যাতায়াতের সমস্যা দূর হয়, তেমনি অন্যদিকে কর্মস্পেস নিজের পছন্দ অনুযায়ী তৈরি করা যায়। তবে রিমোট কাজের কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে, যেমন সহকর্মীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের অভাব এবং বিভিন্ন সময় অঞ্চলের কারণে রাত জেগে কাজ করতে হতে পারে।
এই চাকরি পেতে হলে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করা জরুরি। পোর্টফোলিও তৈরি করা, সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকা এবং যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ। তৌহিদ এবং সাদমানের মতে, প্রাথমিকভাবে ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে কাজ শুরু করে অভিজ্ঞতা অর্জন করা উচিত।
তৌহিদ নিজের জীবনের পরিবর্তনের কথা শেয়ার করে বলেন, রিমোট কাজ তাকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করেছে। তবে তিনি সতর্ক করেন, অনলাইন মার্কেটপ্লেসে নামার আগে দক্ষতার যথাযথ উন্নতি করা জরুরি।
এভাবে, রিমোট চাকরি তরুণদের জন্য এক নতুন সম্ভাবনার দিক খুলে দিয়েছে, কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা ও দক্ষতা অর্জন ছাড়া সফল হওয়া সম্ভব নয়।