আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশে কয়েকটি অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শৈত্যপ্রবাহ ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ ও ৯ তারিখের মধ্যে দেখা দিতে পারে এবং তা ধীরে ধীরে গরমের মাত্রা বাড়ানোর পরেই শীতের শেষ হয়ে যাবে। তবে, মাসের শেষ দিকে তাপমাত্রা বাড়ার ফলে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
এদিকে, ফেব্রুয়ারি মাসের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, গত কয়েক বছর ধরে প্রতি মাসের পূর্বাভাসে বঙ্গোপসাগরে একাধিক লঘুচাপ বা নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার আভাস থাকলেও, এবার সেই ধরনের কোনো পূর্বাভাস নেই। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ফোরকাস্টিং কর্মকর্তা নাজমুল হক জানিয়েছেন, আগামী সোমবার ও মঙ্গলবার তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। তবে তারপরই তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে এবং ৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারিতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।
এছাড়া, গত জানুয়ারি মাসের আবহাওয়া বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল। জানুয়ারিতে দেশের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রেকর্ড করা হয়। বিশেষ করে ১০ জানুয়ারি তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হলেও, জানুয়ারি মাসের গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। এর ফলে, এবারের শীতে গত ১৬ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।
এদিকে, গত জানুয়ারিতে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ইতিহাস ২০০৯ সালের পর সবচেয়ে বেশি ছিল। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছিল। এরপর ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে সৈয়দপুরে ২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল, যা দেশের শীতলতম মাস হিসেবে পরিচিত। কিন্তু গত জানুয়ারি মাসে তাপমাত্রার পারদ অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে এবার শীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিবর্তনগুলো দেশের সাধারণ মানুষের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য আবহাওয়া পরিবর্তন হতে পারে, কারণ মাসের শেষে গরমের প্রকোপ বাড়তে পারে।
এছাড়া, মৃদু শৈত্যপ্রবাহ এবং তাপমাত্রার ওঠানামার সঙ্গে আগামী মাসগুলোতে আরও প্রকৃতিগত পরিবর্তন হতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।