বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন, যেখানে তিনি বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন। তারেক রহমান বলেছেন, যদি সংস্কারের আলোচনা অতিরিক্ত সময় ধরে চালানো হয়, তাহলে তা দেশের জন্য বিপদজনক হতে পারে এবং দেশ আরো সংকটে পড়বে। তার মতে, দেশবাসী বহু সময় ধরে স্বৈরাচারের শাসন থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছে এবং সেই স্বৈরাচার আবার ফিরে আসলে তা দেশের জন্য বিপদজনক হবে। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা মূলত একটি সতর্কীকরণ, যাতে সংস্কারের আলোচনা যাতে দীর্ঘায়িত না হয় এবং কোন ষড়যন্ত্রকারীরা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার সুযোগ না পায়।
তারেক রহমান বলছেন, যারা সংস্কারের প্রস্তাব দিচ্ছেন, তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে তারা এই আলাপ-আলোচনার সময় দীর্ঘ না করেন। কারণ, দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা চললে স্বৈরাচারী শক্তির সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে এবং তারা আবার দেশের মানুষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তার মতে, সংস্কারের কাজ শুরু করতে হলে আগে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন, যেখানে জনগণ তাদের প্রতিনিধিকে নির্বাচন করে তাদের হাতে ক্ষমতা দিবে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই পরে সংস্কারের কাজ শুরু করতে পারবেন এবং সেই মাধ্যমে দেশের সমস্যা সমাধানের পথ সুগম হবে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, সংস্কার প্রস্তাবগুলি যখন বাস্তবায়ন হতে শুরু করবে, তখন তা দেশকে সংকট থেকে বের করে আনতে সক্ষম হবে। তবে, নির্বাচন ছাড়া এই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তিনি এই প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য দেশের জনগণের ওপর আস্থা রাখতে বলেন, কারণ নির্বাচনই একমাত্র পথ, যার মাধ্যমে জনগণ তাদের ইচ্ছা এবং মতামত প্রকাশ করতে পারে।
তারেক রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যেকোনো রাজনৈতিক প্রক্রিয়া অথবা সংস্কার প্রক্রিয়া সফল হতে হলে তা জনগণের জন্য হতে হবে। নির্বাচন জনগণের মতামতের ভিত্তিতে হওয়া উচিত, কারণ এর মাধ্যমে জনগণ সরাসরি তাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ পরিচালনায় আসা নতুন নেতৃত্ব দেশের সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। তবে, তিনি তা নিশ্চিত করেছেন যে, নির্বাচন হলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে না, তবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে পরিবর্তন আসবে।
এ সময় তিনি বিএনপির সদস্যদের এবং সমর্থকদের প্রতি একটি শক্তিশালী বার্তা দেন, যাতে তারা একত্র হয়ে দেশের পরিবর্তনের জন্য কাজ করে। তার মতে, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা একদিন জনগণের সামনে দেওয়া তাদের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে সংস্কার প্রক্রিয়া সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবেন।
এ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন দলের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ এবং বিপুল সংখ্যক বিএনপির কর্মী-সমর্থক। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আয়োজনে শ্যামপুরের কদমতলীতে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় বক্তৃতার মাধ্যমে দেশ, জনগণ এবং রাজনৈতিক বাস্তবতার উপর তারেক রহমান গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।