Wednesday, May 7, 2025
spot_imgspot_img
Homeআন্তর্জাতিকইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিরুদ্ধে নৃশংস নির্যাতন চালিয়েছে।

ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিরুদ্ধে নৃশংস নির্যাতন চালিয়েছে।

ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে। ১ ফেব্রুয়ারি, শনিবার, ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স সোসাইটি এই বিষয়টি জানিয়েছে। সম্প্রতি ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির চতুর্থ ধাপে ১৮৩ ফিলিস্তিনি ও ৩ ইসরায়েলি মুক্তি পেয়েছেন। তবে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দিদের মধ্যে অনেকেই মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন নিয়ে গাজা শহরের খান ইউনিসে অবস্থিত ইউরোপীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছিলেন।

বন্দিদের অবস্থা দেখে এটি স্পষ্ট যে, তাদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে চলেছে নিষ্ঠুর নির্যাতন, অনাহার, চিকিত্সা বঞ্চনা এবং তাদের মধ্যে স্ক্যাবিস সংক্রমণও ছিল। বন্দিরা জানান, ইসরায়েলি কারাগারে তাদের ওপর শারীরিক অত্যাচার এতটাই নির্মম ছিল যে, অনেকের পাঁজরের হাড়ও ভেঙে গেছে।

আল জাজিরা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, বন্দিদের মুক্তির পর কিছু বন্দি বলতে থাকেন যে, ইসরায়েলি কারারক্ষীরা তাদের প্রতি পশুর মতো আচরণ করেছে। তাদের মধ্যে একজন বন্দি জানান, “গত ১৫ মাস ধরে আমরা সবচেয়ে নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয়েছি। ইসরায়েলরা আমাদের সঙ্গে অসহনীয় আচরণ করেছে, আমাদের ওপর পশুর মতো অত্যাচার করেছে।”

এই ঘটনা নিয়ে ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো এই অত্যাচারকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ এবং ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। হামাস আরও দাবি করেছে, জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাছে এই বিষয়টি তুলে ধরে ন্যায়বিচারের দাবি জানানো হয়েছে।

এদিকে, রেড ক্রসের কর্মীরা কেটজিওট কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া বন্দিদের ওপর ইসরায়েলি প্রিজন সার্ভিসের আচরণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, এমন নির্যাতন আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন। মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের মধ্যে বেশ কিছু লোকের শরীরে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, এবং তারা চিকিৎসার জন্য অতিরিক্ত সহায়তার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন।

ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স সোসাইটির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বন্দির শরীরে অত্যন্ত ভয়াবহ আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে, যা ইসরায়েলি কারারক্ষীদের অত্যাচারের ফল। অনেক বন্দি গুরুতর শারীরিক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন এবং তারা চিকিৎসা নিতে পারেনি।”

এছাড়া, মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিরা জানান, কারাগারে বন্দি থাকার সময় অনেকেই মারধর, অত্যাচার, অপুষ্টি এবং চিকিৎসা বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে একাধিক লোক দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা না পেয়ে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন এবং তাদের শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে।

হামাস এবং ফিলিস্তিনিরা আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে যাতে তারা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এই নির্যাতনকে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আর্জি জানানো হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments