Saturday, April 19, 2025
spot_imgspot_img
Homeজাতীয়বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেছেন, শেখ হাসিনার দুর্নীতির উপর পিএইচডি করা উচিত।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেছেন, শেখ হাসিনার দুর্নীতির উপর পিএইচডি করা উচিত।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়ার দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, “বিগত সরকারের সময়ে মূল্যস্ফীতি, জিডিপি, ব্যাংকঋণের সুদের হার এবং ডলারের বিনিময় হার কৃত্রিমভাবে ধরে রাখা হয়েছিল, যার কারণে বর্তমানে সামষ্টিক প্রভাব পড়েছে।” তিনি এই মন্তব্যটি করেছেন আজ, ২ ফেব্রুয়ারি, রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক দাম এবং বাজার তত্ত্বাবধান বিষয়ে নীতিসংলাপে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, “বিগত সরকারের কিছু কর্মকাণ্ডের ফলে আজকের অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের উচিত এই ধ্বংসপ্রাপ্ত খাতগুলো পুনর্গঠন করা।” এর আগে, তিনি সাবেক সরকারের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কথা বলেন এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “বিগত ১৫ বছরে কোনো উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ হয়নি, যা দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের জন্য সংকট তৈরি করেছে।”

শেখ বশিরউদ্দীন তার বক্তব্যে আরো উল্লেখ করেন যে, বাজার তত্ত্বাবধানের জন্য বর্তমানে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে, আগামী রমজান মাসে দেশের বাজারে নিত্যপণ্যের কোনো সংকট হবে না। তিনি জানিয়েছেন যে, দেশের মজুত ও আমদানির ব্যবস্থা যথেষ্ট আছে এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, “আশাকরি, আগামী রমজানে বাজারে কোনো সমস্যা হবে না এবং আন্তর্জাতিক বাজারের দামের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো বড় পরিবর্তনও হবে না।”

এছাড়া, বাণিজ্য উপদেষ্টা ব্যাংকিং সিস্টেমের দুর্নীতি নিয়েও সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “ব্যাংকগুলো ক্রিমিনাল ইনস্টিটিউট হিসেবে পরিণত হয়েছে এবং ইসলামী ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “টিসিবি (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) এর দুর্নীতি নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন, এখানে ১ কোটি উপকারভোগী থাকা সত্ত্বেও ৪৩ লাখ ভুয়া উপকারভোগী পাওয়া গেছে। আমি ধারণা করছি, যদি এক্সট্রা লেভেলে যাচাই করা হয়, তবে আরো ২০-২৫ লাখ ভুয়া উপকারভোগী পাওয়া যাবে।”

তিনি সরকারের পক্ষ থেকে টিসিবি-এর কার্যক্রম ও উপকারভোগীদের যাচাই-বাছাই করার পরিকল্পনা জানিয়েছেন এবং ব্যবসায়ীদেরও এই কাজে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “ব্যবসায়ীদের টিসিবির টেন্ডারে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে সঠিকভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যায়।”

শেখ বশিরউদ্দীন আশা প্রকাশ করেছেন যে, সরকার প্রতিযোগিতা কমিশনকে স্বাধীন করবে, যাতে বাজারে কোনো ধরনের প্রতিযোগিতাবিরোধী কার্যক্রম না ঘটে। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো, দেশে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা এবং বাজারে স্বাভাবিক প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা।”

এদিকে, বাণিজ্য উপদেষ্টা খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য আরও কয়েকটি পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “ধান সংগ্রহের সরকারি পরিকল্পনা সীমিত করা হবে এবং সরকারি সংগ্রহ আমদানিনির্ভর হওয়া উচিত। এর মাধ্যমে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বাড়বে এবং দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।”

সবশেষে, শেখ বশিরউদ্দীন দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন এবং বলেন, “আমরা যদি দেশের অর্থনীতিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে না পারি, তাহলে কর্মসংস্থান তৈরি সম্ভব হবে না এবং কর আদায়ের পরিমাণও কমে যাবে।” তার এই মন্তব্যগুলো দেশের অর্থনৈতিক নীতির গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ এবং সরকারের পদক্ষেপের প্রতি এক বিশদ চিন্তা প্রদর্শন করে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments