সাত কলেজের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয়: নাম হতে পারে ‘মুবারকাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়’
কয়েকদিন ধরে রাজধানীতে সাত কলেজ নিয়ে চলছে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। এই সাতটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখের কাছাকাছি, শিক্ষকসংখ্যাও হাজারের বেশি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকাকালীন এসব কলেজে নিয়মিত ক্লাস, পরীক্ষা ও ফলপ্রকাশে নানা জটিলতা ছিল। শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সেশনজট কমানোর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছিলেন।
প্রায় আট বছর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপেক্ষা করে এই কলেজগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়া হয়। কিন্তু এতে সমস্যার সমাধান তো দূরের কথা, বরং শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা এবং পর্যাপ্ত কাঠামো না থাকায় শিক্ষার্থীরা বারবার সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথক করার উদ্যোগ নিয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি ধারাবাহিক বৈঠক করছে এবং নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনাও চলছে। তবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম কী হবে, তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হিসেবে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রস্তাব করা হলেও তা ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। এই সাতটি সরকারি কলেজের জন্য এমন একটি নাম কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঢাকার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, নগরীর একটি প্রাচীন নাম ছিল ‘ইকলিম মুবারকাবাদ’। ১৫শ শতকে পাওয়া বিভিন্ন শিলালিপিতে এই নামের উল্লেখ পাওয়া যায়।
সেই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ঢাকার এই সাত কলেজ নিয়ে গঠিত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ‘মুবারকাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়’ হলে তা যথাযথ ও ঐতিহ্যবাহী হবে। এর ফলে ঢাকার ঐতিহাসিক গুরুত্বও নতুনভাবে প্রতিফলিত হবে। তবে সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা জরুরি।