ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করার আহ্বানকে ‘অবিবেচনাপ্রসূত ও নিষ্ফল’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা ইরানের সমস্যা সমাধানে কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখবে না এবং দেশীয় সম্পদ ও আত্মনির্ভরতার ওপর ভিত্তি করেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। খামেনির বক্তব্যে এই প্রসঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অতীত কর্মকাণ্ডের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, যেখানে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে একটি চুক্তি করেছিল, তবে সেই চুক্তিটি পরে আমেরিকা একতরফাভাবে বাতিল করে দেয়। তিনি আরও বলেন, পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে ইরান বুঝতে পেরেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করা কখনওই সুফল বয়ে আনবে না।
খামেনি তার বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে বলেন, ইরানি জাতির নিরাপত্তা যদি ক্ষুণ্ণ হয়, তবে ইরান পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত থাকবে। তিনি এও উল্লেখ করেন যে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী নিজেদের আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন করেছে এবং দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা শক্তিশালী হয়েছে। খামেনি তার ভাষণে ইরানের বিমান বাহিনীর কমান্ডার বাহেদির প্রতিবেদন তুলে ধরেন, যেখানে বলা হয়েছে যে, দেশটি ১০০% আত্মনির্ভরশীল এবং সশস্ত্র বাহিনী সর্বদা সুরক্ষিত থাকার জন্য প্রস্তুত।
খামেনির এই বক্তব্য ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের আরও জটিলতর পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে। একদিকে, ইরান দেশীয় সম্পদ এবং শক্তির ওপর ভিত্তি করে সঙ্কট মোকাবিলা করার বার্তা দিচ্ছে, অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের কোনো স্থিতিশীলতা না থাকায় তাদের প্রতি আস্থা হারানোর পক্ষে যুক্তি দাঁড় করাচ্ছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতার এ ধরনের কঠোর অবস্থান ইরানি জনগণের মধ্যে জাতীয়তাবাদী মনোভাবকেও উজ্জীবিত করেছে, যেখানে তারা তাদের নিজস্ব শক্তি এবং স্বার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে প্রস্তুত।
ইরান যখন তার প্রতিরক্ষা সক্ষমতা এবং স্বাধীনতার দিকে মনোনিবেশ করছে, তখন বিশ্বরাজনীতিতে তার অবস্থান স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। খামেনির এই বক্তব্যের মাধ্যমে ইরান পশ্চিমা বিশ্বের চাপের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী অবস্থান গ্রহণের সংকেত দিচ্ছে, যা বিশ্বের অন্যান্য শক্তির সাথে সম্পর্ককে আরও সংকটময় করে তুলতে পারে।