ফারুক ই আজম জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে এক ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এটি ছিল স্বৈরাচারী দমননীতির বিরুদ্ধে তরুণদের সাহসী পদক্ষেপ এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ঐতিহাসিক লড়াই। গত ৭ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির আর্ট গ্যালারিতে ‘The Art of Democracy, Unity – A Journey of Unity’ শীর্ষক দুই দিনের চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফারুক ই আজম বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম ক্ষমতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল এবং সেটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হয়ে থাকবে। তিনি আরও জানান, এই আন্দোলনে নিহতদের পরিবার এবং আহতদের চিকিৎসায় সরকার কাজ করছে এবং তাদের দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে আশাবাদী।
এছাড়া, তিনি উল্লেখ করেন যে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের শিখিয়েছে যে, একটি ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে তরুণরা একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে এবং একটি অধিকতর ন্যায়পরায়ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নিজেদের শক্তি ও সাহস প্রদর্শন করেছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লব শুধু বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন নয়, এটি ছিল মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম। তিনি আরও বলেন, ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। তিনি শিগগিরই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগ্রামীদের সম্মান জানাতে চিত্র প্রদর্শনীর মতো আরও অনেক কর্মসূচি আয়োজনের কথা জানান।
চিত্র প্রদর্শনীতে ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৬০টি আলোকচিত্র, স্লোগান, গ্রাফিতি এবং একটি তথ্যচিত্রের টিজার প্রদর্শিত হয়। এই প্রদর্শনীতে শিক্ষার্থীদের সংগ্রামের শক্তি এবং তাদের অবদান প্রদর্শন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে “জুলাই বিপ্লব”-এর ওপর ভিত্তি করে একটি ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়, যা আন্দোলনের গুরুত্ব এবং প্রভাবকে তুলে ধরে।
এছাড়া, আয়োজকদের পক্ষ থেকে প্রকল্প পরিচালক মিনহাজ উদ্দিন জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ইতিহাস সংরক্ষণে তারা বিভিন্ন ক্যাম্পাসে চিত্র প্রদর্শনী, তথ্যচিত্র নির্মাণ, আর্কাইভ বুক এবং ডাটাবেজ ওয়েবসাইট তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন।
এই প্রদর্শনীটি চলবে শুক্রবার ও শনিবার, এবং এটি তরুণদের আন্দোলনের ইতিহাসকে সংরক্ষণ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছানোর এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।