ডিম খাওয়ার বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় পদ্ধতি রয়েছে, যেমন অমলেট, পোচ এবং সিদ্ধ। তবে, তাদের মধ্যে সিদ্ধ ডিমই সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু, সঠিকভাবে সিদ্ধ ডিম তৈরি করা অনেকের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সময় আমরা দেখি যে, ডিম সিদ্ধ করতে গিয়ে কুসুম সম্পূর্ণ শক্ত হয়ে যায়, অথবা সাদা অংশ ঠিকভাবে সিদ্ধ হয় না। তবে, বিজ্ঞানীরা একটি নতুন এবং নিখুঁত পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন, যা দিয়ে আপনি সঠিকভাবে ডিম সিদ্ধ করতে পারবেন। যদিও এই পদ্ধতিতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগে, তবে এর ফলাফল অত্যন্ত সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর।
গবেষকদের মতে, সিদ্ধ ডিমের নিখুঁত পদ্ধতিতে প্রথমে ডিমকে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সিদ্ধ করা হয়, এরপর কুসুমকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরম পানিতে রেখে ৩২ মিনিট ধরে পর্যায়ক্রমিকভাবে ডিম স্থানান্তরিত করা হয়। প্রতি দুই মিনিট অন্তর ডিমের অবস্থান পরিবর্তন করতে হয়। এই পদ্ধতিতে সিদ্ধ করা ডিমের কুসুম সুই ভিড পদ্ধতির মতো নরম থাকে, তবে সাদা অংশটা অর্ধসিদ্ধ হয়ে যায় এবং ঘন হয়ে থাকে, যা অনেকেই পছন্দ করেন।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, এই পদ্ধতিতে সিদ্ধ ডিমে অন্যান্য পদ্ধতির তুলনায় বেশি পরিমাণে পলিফেনল থাকে। পলিফেনল এক ধরনের মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং প্রদাহ-নিবারক বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। পলিফেনল একটি গুরুত্বপূর্ণ যৌগ যা শরীরের নানা ধরনের রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, এটি হৃদরোগ, ক্যান্সার এবং স্নায়ুবিক রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
গবেষকদের দল ইতালির ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের বিজ্ঞানী পেলেগ্রিনো মুস্টোর নেতৃত্বে কম্পিউটেশনাল ফ্লুইড ডাইনামিক্স (সিএফডি) ব্যবহার করে ডিম সিদ্ধ করার প্রক্রিয়ার সিমুলেশন তৈরি করেছেন। এটি একটি বিশেষ ধরনের বিজ্ঞান, যেখানে তরল এবং গ্যাসের প্রবাহ কিভাবে হয় তা বিশ্লেষণ করা হয়। এই সিমুলেশনটির মাধ্যমে গবেষকরা নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন যা বিজ্ঞানী এবং শেফদের কাছে একটি বিপ্লবী আবিষ্কার হিসেবে পরিচিত।
সাধারণভাবে, ডিম সিদ্ধ করতে গিয়ে অনেকেই সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে পারেন না, কিন্তু এই নতুন পদ্ধতিটি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সিদ্ধ ডিমের গুণগত মান অনেক উন্নত করে দেয়। এই পদ্ধতি শুধু ডিমের স্বাদ উন্নত করে না, বরং স্বাস্থ্যও ভাল রাখতে সহায়তা করে।
এই নতুন পদ্ধতিটি যারা রান্নাঘরে একটু বেশি সময় দিতে প্রস্তুত, তাদের জন্য আদর্শ। ডিম সিদ্ধ করার এই পদ্ধতিতে শুধু একটি নিখুঁত এবং সুস্বাদু ডিম পাওয়া যাবে, পাশাপাশি আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও এটি উপকারী।