দেশজুড়ে চলমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিকে সমর্থন করছে না বিএনপি। দলটি বলছে, গণঅভ্যুত্থানের ছয় মাস পর এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়া নির্বাচনের সময় প্রলম্বিত করার একটি ষড়যন্ত্র হতে পারে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের কারণে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছে। বিএনপির মতে, সরকার এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে এবং এখন সময় এসেছে কঠোর হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার। দলের নেতারা মনে করছেন, যদি সরকার যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে দেশে নৈরাজ্য আরো বৃদ্ধি পাবে।
বিএনপির নেতারা বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দলটি কাউকে সরাসরি দোষারোপ করবে না বা কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করবে না, তবে তাদের অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরবে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে একমত হয় তারা যে, এই পরিস্থিতি নির্বাচন প্রলম্বিত করার ষড়যন্ত্রের অংশ এবং তা বিএনপির বিরুদ্ধে। তাই দলের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তারা যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা হিংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত না হন। বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবে এবং নির্বাচনের দাবি জানাবে।
বিএনপি এই পরিস্থিতিকে একটি ফাঁদ হিসেবে দেখছে, যাতে নির্বাচন বিলম্বিত করা হয়। দলের নেতারা বলছেন, ছাত্রদের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে চাচ্ছে এবং এতে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণায় বিলম্ব করতে চাইছে। বিএনপি দাবি করছে, দেশে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, কিন্তু এতদিন পর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটানো বোধগম্য নয়। তারা মনে করছে, এই ধরনের ঘটনা দেশের স্থিতিশীলতার জন্য ক্ষতিকর এবং এভাবে নৈরাজ্য সৃষ্টির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
দলের নেতারা, বিশেষ করে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, দাবি করছেন যে বর্তমান পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণে না আসে, তবে অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে না। বিএনপি আগামী নির্বাচনের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছে। দলের পক্ষ থেকে রমজানের আগেই বিভাগীয় ও জেলা সমাবেশ করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে। বিএনপি চলতি বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চায় এবং জুলাই-আগস্টের মধ্যে নির্বাচন হওয়া সম্ভব বলে মনে করছে।
এছাড়া, দলের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করারও পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে তারা নির্বাচন প্রক্রিয়ার ব্যাপারে আলোচনা করবে। বিএনপি, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সুষ্ঠু, অবাধ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি জানিয়ে চলেছে