ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাবমূর্তি নষ্টে অপপ্রচারে লিপ্ত আওয়ামী লীগ – শফিকুল আলম
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে তার ভাবমূর্তি নষ্টের ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি দাবি করেন, অধ্যাপক ইউনূসকে ‘জঙ্গি নেতা’ হিসেবে উপস্থাপন করতে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করা হচ্ছে, যেখানে ভারতীয় গণমাধ্যমও সক্রিয় ভূমিকা রাখছে।
আওয়ামী লীগের অপপ্রচার ও ভারতীয় মিডিয়ার ভূমিকা
জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘দ্রোহের গ্রাফিতি: ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে শফিকুল আলম এসব কথা বলেন। সাংবাদিক জিএম রাজীব হোসেনের লেখা এ বইয়ের অনুষ্ঠানে তিনি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ ও তাদের স্বৈরাচারী দোসররা বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করতে চাচ্ছে। তারা প্রচার করছে যে তিন হাজার পুলিশ নিহত হয়েছে, অথচ এ দাবির কোনো ভিত্তি নেই। এমনকি তাদের ওয়েবসাইটেও ড. ইউনূসকে ‘জঙ্গি নেতা’ হিসেবে দেখানো হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ সাজানো ও পরিকল্পিত মিথ্যাচার।”
শফিকুল আলম আরও দাবি করেন, “হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী অলিগার্করা বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে সারা বিশ্বে প্রচার চালাচ্ছে, যেন বোঝানো যায় বাংলাদেশে যা ঘটেছে, তা গণ-অভ্যুত্থান নয়, বরং একটি ষড়যন্ত্র। এ অপপ্রচারের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা চলছে।”
বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “আওয়ামী লীগ ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস মুছে নতুন বয়ান চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ নিয়ে গবেষণা হয়নি, সত্যিকারের ইতিহাস প্রকাশিত হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “যে ফটোসাংবাদিক আফতাব আহমেদ বাসন্তীর বিখ্যাত ছবি তুলেছিলেন, তিনি রহস্যজনকভাবে নিহত হন, কিন্তু কোনো তদন্ত হয়নি। রক্ষীবাহিনীর হাতে ৩০ হাজার মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে।”
বই প্রকাশনা উৎসব ও অতিথিদের বক্তব্য
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বক্তব্য রাখেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ সভায় সভাপতিত্ব করেন। অন্যান্য আলোচকদের মধ্যে ছিলেন সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, সৈয়দ আবদাল আহমেদ এবং বাসসের প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ।
উপসংহার
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের প্রচারযন্ত্র ও তাদের আন্তর্জাতিক সহযোগীরা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ভুলভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছে। ড. ইউনূসকে বিতর্কিত করার এই ষড়যন্ত্রের পেছনে বড় অঙ্কের টাকা খরচ করা হচ্ছে, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করতে পারে।