পুলিশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধী ধরতে অভিযানে হামলা ও বাধা দেওয়ার ঘটনা বেড়ে গেছে, যার ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। পুলিশ এখন নীরব দর্শক হয়ে ওঠেছে অনেক ঘটনায়, এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকেও কখনও আইনি পদক্ষেপে ধীরগতির স্বীকার হচ্ছে। এতে জনমনে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, যেমন, পুলিশের পেশাদারিত্ব কোথায়?
বিশ্লেষকরা বলছেন, পুলিশ বাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা ও নৈতিক সংকট বিরাজ করছে। আইন প্রয়োগে বাধা দেওয়ার ফলে অপরাধ দমন কার্যক্রম কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেক পুলিশ সদস্য আইন প্রয়োগে দ্বিধা অনুভব করছেন, কারণ তাঁদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক শাস্তি হওয়ার ভয় রয়েছে। এসব কারণে পুলিশ বাহিনী কার্যকরভাবে কাজ করতে পারছে না।
বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনা সামনে আসছে, যেমন চট্টগ্রামে হাটহাজারীতে গ্রেপ্তার অভিযান চলাকালে হামলা, উত্তরা-পশ্চিম থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা, লক্ষ্মীপুরে ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলা এবং গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের কর্মীদের দ্বারা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর। এসব হামলার ফলে পুলিশ সদস্যরা আহত হন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে ওঠে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আইন প্রয়োগে এই ধরনের বাধা সমাজে অস্থিরতা বাড়াতে পারে। পুলিশ বাহিনী যদি তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করতে পারে, তবে সমাজে অপরাধ বৃদ্ধি পাবে এবং জনগণের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়বে। একদিকে যেখানে পুলিশের পক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, সেখানে ‘মব ভায়োলেন্স’ ও সামাজিক চাপের কারণে পুলিশ বাহিনী অনেক সময় কঠোর পদক্ষেপ নিতে ভয় পাচ্ছে।
এছাড়া, অতিরিক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলে পুলিশের মনোবল আরও নিচে নেমে যেতে পারে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান, যাতে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের উৎসাহ বাড়ানো হয় এবং সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হয়।
এই পরিস্থিতিতে, পুলিশ বাহিনীর নৈতিক অবস্থান পুনরুদ্ধার ও আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে প্রয়োজন বাস্তবভিত্তিক সংস্কারের। সাধারণ জনগণ এবং সরকারের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে, যা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও শক্তিশালী করবে।