বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি জানিয়েছেন, মানুষের মস্তিষ্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা স্বাস্থ্যগত উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পরিচালিত এক নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে মস্তিষ্কের টিস্যুতে প্লাস্টিক কণার পরিমাণ দ্রুত বেড়েছে। ১৯৯৭ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মৃত ৯১ ব্যক্তির মস্তিষ্কের নমুনা বিশ্লেষণ করা হয় এবং গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৬ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মানুষের মস্তিষ্কে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি ৫০ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৬ সালে প্রতি গ্রাম মস্তিষ্কের টিস্যুতে ৩,৩৪৫ মাইক্রোগ্রাম প্লাস্টিক ছিল, যা ২০২৪ সালে বেড়ে ৪,৯১৭ মাইক্রোগ্রামে দাঁড়িয়েছে।
গবেষণার তথ্যে আরও উল্লেখ করা হয়, মস্তিষ্কের টিস্যুতে পাওয়া প্লাস্টিক কণাগুলোর আকার ও ধরন এক রকম নয়। অধিকাংশ কণাই সূক্ষ্ম ও ধারালো, যা সাধারণ মাইক্রোপ্লাস্টিকের তুলনায় ভিন্ন ধরনের। এ প্লাস্টিক কণাগুলো মূলত দৈনন্দিন ব্যবহৃত প্লাস্টিক সামগ্রী, যেমন প্লাস্টিক ব্যাগ, পানির বোতল, খাদ্য মোড়ানোর প্লাস্টিক থেকে আসে। তবে, চিকিৎসা ও খাদ্য শিল্পে ব্যবহৃত পলিস্টাইরিন তুলনামূলক কম পরিমাণে মস্তিষ্কে জমা হয়েছে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, যেসব ব্যক্তির মস্তিষ্কে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেশি ছিল, তাদের মধ্যে ১২ জন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। যদিও স্নায়ুরোগের সাথে প্লাস্টিক কণার সরাসরি সম্পর্ক এখনও স্পষ্ট হয়নি, তবে গবেষকরা ধারণা করছেন যে ডিমেনশিয়ার কারণে মস্তিষ্কে প্লাস্টিক জমা হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। এখনো মস্তিষ্কে প্লাস্টিক কণাগুলো কীভাবে প্রবেশ করছে এবং এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কী হবে তা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।