আয়নাঘর পরিদর্শনে ড. ইউনূস: ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগের নমুনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেছেন। তার সঙ্গে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, গণমাধ্যমের প্রতিনিধি ও ভুক্তভোগীদের কয়েকজনও উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিরোধী মতের মানুষকে গুম, বিচারবহির্ভূত আটক ও অজ্ঞাত স্থানে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এই বন্দিশালাগুলোর প্রতীকী নাম দেওয়া হয়েছে ‘আয়নাঘর’।
পরিদর্শন শেষে ড. ইউনূস বলেন, ‘গত সরকার আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগের একটি নমুনা প্রতিষ্ঠা করেছে। আয়নাঘরের পরিবেশ ভয়াবহ। এখানে মনুষ্যত্ববোধের কোনো স্থান নেই, যা ঘটেছে তা চরম নিষ্ঠুরতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা কি আমাদেরই সমাজ? যে পরিস্থিতি দেখলাম, তা বর্ণনার অতীত। যারা ভুক্তভোগী, তারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা শোনার পর আরও স্পষ্ট হলো কত নির্মম এই নির্যাতন। কতজনকে বিনা দোষে আটক রেখে, সাজানো মামলায় ফাঁসিয়ে জঙ্গি হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। শুধু এখানেই নয়, সারা দেশজুড়ে এমন টর্চার সেল ছড়িয়ে আছে।’
ড. ইউনূস জানান, গঠিত গুম কমিশন এসব ঘটনার অনেক তথ্য উদঘাটন করেছে। তার মতে, ‘দেশের ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক করুণ চিত্র এটি। মানুষকে ন্যূনতম মানবিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে, আয়নাঘরে অন্তত ১,৭০০ জন ভুক্তভোগী রয়েছেন। আরও অনেকে নিখোঁজ, যাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। গুম হওয়া মানুষের স্বজনরা আজও জানে না, তারা কোথায় আছে বা আদৌ বেঁচে আছে কি না।’
‘এটি আমাদের সমাজের জন্য এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। যারা এই অপরাধ করেছে, তারা আমাদেরই কেউ—আমাদের ভাই, আমাদের সন্তান। এই বাস্তবতা থেকে জাতিকে বের করে আনতে হবে। মুক্ত বাংলাদেশে নতুনভাবে দেশ গড়তে হবে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।