মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ধারণা অনুযায়ী, ইসরায়েল এ বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে, যার ফলে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কিছুটা বিলম্বিত হবে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট একাধিক গোয়েন্দা প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে জানিয়েছে যে, এই হামলা ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমকে কয়েক সপ্তাহ বা মাসের জন্য পিছিয়ে দিতে সক্ষম হতে পারে, তবে এর ফলে এই অঞ্চলে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং বড় ধরনের সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
ওয়াশিংটন পোস্ট আরও জানায়, বাইডেন প্রশাসন ও ট্রাম্প প্রশাসনের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এই ধরনের হামলার সম্ভাবনা প্রকাশ পেয়েছে, তবে হোয়াইট হাউস কিংবা সিআইএ এই বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। ইসরায়েল সরকার, সিআইএ, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা এবং জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের কার্যালয়ও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুসারে, ইসরায়েল ২০২৪ সালের মধ্যে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিতে পারে। বিশেষত, ইরানের ফোরডো এবং নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হতে পারে। এছাড়া, গত অক্টোবর মাসে ইসরায়েল ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল করতে বোমা হামলা চালিয়েছে এবং এর পরবর্তী আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করতে দেওয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত দৃঢ় অবস্থানে ছিল। ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র থেকে বিরত রাখতে একটি চুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।” তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলকে তার অনুমোদন ছাড়াই ইরানে হামলা চালানোর অনুমতি দেবেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, ইরান ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে পারমাণবিক চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় তার পারমাণবিক কর্মসূচি শুরু করেছে এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে। ইরান এই বছরের শুরুর দিকে চুক্তি পুনরায় শুরুর লক্ষ্যে অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে, তবে এর মধ্যে তীব্র আন্তর্জাতিক বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে এক দিকে এই উত্তেজনা, অন্য দিকে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর চুক্তি ও দ্বন্দ্বের কারণে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাতের ঝুঁকি বাড়ছে, যা গোটা বিশ্বকে উদ্বেগে ফেলেছে।