এবারের আলু চাষে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ প্রায় ১৭ টাকা হলেও, কৃষকরা বাজারে ৭-৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে তাদের লোকসান বেড়ে গেছে। গত বছর উৎপাদন খরচের তুলনায় আলুর দাম বেশি থাকায় কৃষকরা বেশি জমিতে আলু চাষ করেছিলেন, তবে এবারের দাম কম হওয়ায় তাদের নাজুক অবস্থায় পড়তে হচ্ছে।
কৃষকরা জানাচ্ছেন, খরচের পরিমাণ বেশি হলেও, দাম কম হওয়ায় আলু চাষে লাভ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বগুড়ার কৃষক নাফিসুল ইসলাম বলেন, প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে ৪০-৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, কিন্তু বাজারে দাম অর্ধেক হওয়ায় তিনি এখনও আলু তুলে কোল্ড স্টোরেজে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একইভাবে, অন্যান্য কৃষকরাও জানাচ্ছেন যে, উৎপাদন খরচ ওঠানোর জন্য তারা আলু বাজারে তুলতে পারছেন না এবং কোল্ড স্টোরেজ ভাড়া বৃদ্ধি তাদের আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্যে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ ১৭.২৬ টাকা হলেও, তা কৃষকরা ৭-৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। এছাড়া, কোল্ড স্টোরেজের ভাড়া বৃদ্ধি এবং উৎপাদন খরচের চাপ কৃষকদের জন্য আরও কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। একদিকে দাম কম, অন্যদিকে খরচ বৃদ্ধি—এতে তারা নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন।
এবারের আলু উৎপাদনের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় চলতি মৌসুমে ৪.৬৭ লাখ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও, ইতোমধ্যে ৫.২৪ লাখ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। বাংলাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, কৃষকদের ভ্যালু অ্যাড এবং গ্রুপ মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে। এতে কৃষকরা সরাসরি বাজারের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন এবং তাদের ক্ষতি কিছুটা কমানো সম্ভব হবে।