মুখের দুর্গন্ধ, যা সাধারণত হ্যালিটোসিস নামে পরিচিত, অনেকের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দাঁত, মাড়ি, জিভ বা মুখের ভিতরের অংশে সংক্রমণ থাকলে এই সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। নিয়মিত ব্রাশ করা সত্ত্বেও কিছু কারণে মুখের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। এই দুর্গন্ধের বেশ কিছু সাধারণ কারণ রয়েছে, যেমন খারাপ ওরাল হাইজিন, মাড়ির ব্যথা, বা পিরিওডোনটাইটিস। পিরিওডোনটাইটিস, যা এক ধরনের মাড়ির অসুখ, দাঁত এবং মাড়ির মাঝে ব্যাকটেরিয়া জমে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে। অতিরিক্ত ক্যাভিটি, দাঁতের ক্ষয় বা পাইওরিয়া থেকেও দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়।
এছাড়া পেটের সমস্যা বা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো শারীরিক সমস্যা মুখের দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে। গ্যাস্ট্রোফেজিয়াল রিফ্লাক্স বা অন্ত্রের সমস্যায়ও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে, কারণ পরিপাকতন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া হাইড্রোজেন সালফাইড তৈরি করে, যা দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধের আরেকটি কারণ হলো ডিহাইড্রেশন বা পানির অভাব। যখন শরীরে পানি কম থাকে, তখন মুখ শুষ্ক হয়ে যায় এবং মুখের ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পেতে থাকে, যা দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে।
ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় যেমন কফি বা চা অতিরিক্ত খাওয়াও মুখের দুর্গন্ধের জন্য দায়ী। ক্যাফেইন মুখের লালা শুষ্ক করে দেয়, যা ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এছাড়া, সঠিকভাবে না ঘুমানো বা নাক ডাকা থেকেও মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে। কারণ, নাক ডাকার সময় মানুষ মুখ দিয়ে শ্বাস নেয় এবং এর ফলে মুখে শুকনো ভাব তৈরি হয়, যা দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে।
মুখের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে কিছু সহজ পদক্ষেপ অনুসরণ করা যেতে পারে। প্রতিদিন দুটি বার ব্রাশ করুন এবং খাবারের পর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। মৌরি বা এলাচ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে মুখে গন্ধ কমে যেতে পারে। পাশাপাশি, পর্যাপ্ত পানি পান, সুষম খাবার গ্রহণ এবং ঘুমের অভ্যাসও ঠিক রাখা প্রয়োজন। যদি সমস্যা অব্যাহত থাকে, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।