ইতালিগামী ২৪ তরুণ লিবিয়ায় নিখোঁজ: স্বজনদের অনশন ও দালাল গ্রেপ্তার
শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের ২৪ তরুণ ইতালিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে লিবিয়া পৌঁছে নিখোঁজ হয়েছেন। দালাল চক্রের প্রতারণায় পড়ে তাঁদের পরিবারের কাছ থেকে ১২-২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। স্বজনরা শনিবার শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে অনশন করে তাঁদের সন্ধান ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
কীভাবে নিখোঁজ হলেন ২৪ জন?
২০২২ ও ২০২৩ সালে শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের বিভিন্ন এলাকার ২৪ যুবককে ইতালি পাঠানোর কথা বলে লিবিয়া নেওয়া হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর হয়ে তাঁরা লিবিয়ায় পৌঁছান। পরে তাঁদের সাগরপথে ইতালি পাঠানোর চেষ্টা করা হয়, কিন্তু ২১-২২ মার্চ ২০২3 থেকে তাঁদের কোনো খোঁজ নেই।
দালাল চক্রের সদস্যরা কয়েকজনকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করলেও বাকিদের ভাগ্য এখনো অজানা। এই চক্রের মূলহোতা রাশেদ খানসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে শরীয়তপুর আদালত ও থানায় ১১টি মামলা হয়েছে।
দালাল চক্রের মূলহোতা গ্রেপ্তার
মাদারীপুরের কালকিনির সূর্যমণি এলাকার সাইফুলের বাবা ফারুক পেদার করা মামলায় ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে শুক্রবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) রাশেদ খানকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার তাঁকে শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
স্বজনদের আর্তনাদ ও অনশন
নিখোঁজ শাহীন সিকদারের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার তিন বছর বয়সী সন্তানকে নিয়ে আদালত চত্বরে অনশন করেন। তিনি জানান, তাঁর স্বামী ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে দালালের সঙ্গে বাড়ি ছাড়েন এবং মার্চে লিবিয়া থেকে শেষ ফোন আসে। এরপর থেকে তাঁর কোনো খোঁজ নেই।
রিয়াজ আকন নামে এক ব্যক্তি জানান, ছোট ভাই দিদার হোসেনের ইতালি যাওয়ার জন্য জমি ও গরুর খামার বিক্রি করে দালালকে ২০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এক বছর ধরে ভাইয়ের কোনো সন্ধান নেই।
পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা
গ্রেপ্তার রাশেদ খানের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ, অন্যদিকে আসামিপক্ষ জামিন চেয়েছে। আদালত সোমবার শুনানির দিন ধার্য করেছে।
বাংলাদেশে মানব পাচার প্রতিরোধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নিখোঁজদের স্বজনরা।