বিএনপির ‘তিস্তা আন্দোলন’ ঘিরে উত্তরের ৫ জেলায় নতুন আশা
উত্তরাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য এবার মাঠে নেমেছে বিএনপি। ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ নামক সংগঠনটি এই দাবিকে কেন্দ্র করে আন্দোলন পরিচালনা করছে, যেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু।
আজ সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিস্তার লালমনিরহাট প্রান্তে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ভার্চুয়ালি এই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কর্মসূচিতে বিএনপির শীর্ষ ১৪ নেতাও অংশ নেবেন। রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার ১১টি পয়েন্টে এই অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
আন্দোলন ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়কারী এমদাদুল হক ভরসা জানান, ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারির এই কর্মসূচির জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, দুই দিনে বিপুল সংখ্যক জনসমাগম হবে। আন্দোলনে অংশ নিতে তিস্তাপাড়ে আসছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
লালমনিরহাটের দুটি পয়েন্টে অবস্থান নেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অন্যান্য পয়েন্টে থাকবেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রুহুল কবির রিজভী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ দলীয় সিনিয়র নেতারা।
তিস্তার পানির দাবিতে জনগণের আশা
স্থানীয় জনগণ মনে করছেন, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও মহাপরিকল্পনা ছাড়া তারা টিকে থাকতে পারবে না। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের দাবি সরকারের কাছে জোরালোভাবে তুলে ধরা সম্ভব হবে। গঙ্গাচড়ার চর ইচলীর বাসিন্দা শাহিনুর রহমান বলেন, “আগের সরকার শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু আমাদের দাবি পূরণ করেনি। এবার আমরা দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামব।”
তিস্তার ধূ ধূ বালুচরে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি
আন্দোলনের দুদিন আগে আকস্মিকভাবে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কমতে শুরু করে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গত শনিবার তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ বেড়ে ২৩০০ কিউসেক হয়েছিল, তবে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তা কমতে শুরু করে।
তিস্তা আন্দোলন একটি সামাজিক আন্দোলন
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘তিস্তা আন্দোলন’ শুধু বিএনপির নয়, এটি একটি গণমানুষের আন্দোলন। তিস্তাপাড়ের সাধারণ মানুষই এর প্রাণশক্তি। সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন সংগঠনও এই কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়েছে।
এই কর্মসূচির মাধ্যমে উত্তরের ৫ জেলার জনগণ নতুন করে আশার আলো দেখছে, কারণ তারা মনে করছে, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে এটি বড় ভূমিকা রাখবে।