ইরান-সৌদি সম্পর্ক: নতুন সমীকরণে মধ্যপ্রাচ্য
২০১৬ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর ২০২৩ সালের মার্চে চীনের মধ্যস্থতায় ইরান ও সৌদি আরব তাদের সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে সম্মত হয়। দীর্ঘ দুই বছরের আলোচনার পর এই চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দুই দেশ নতুন কূটনৈতিক অধ্যায়ে প্রবেশ করে।
সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে তেহরান ও রিয়াদের কর্মকর্তারা একাধিক কূটনৈতিক সফর করেন। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও আঞ্চলিক উন্নয়ন নিয়েও তারা মতবিনিময় করেন। ভারতের গবেষণা সংস্থা ‘নাজার রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ ইরান-সৌদি সমঝোাকে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন বলে মনে করে। তাদের মতে, এই সম্পর্ক পুনঃস্থাপন স্বল্পমেয়াদি নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি কৌশলের অংশ হতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন চ্যালেঞ্জ
২০২৫ সালের শুরু থেকে মধ্যপ্রাচ্য বেশ কয়েকটি বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। গাজার যুদ্ধের প্রভাব সমগ্র অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। ইসরায়েলি হামলায় লেবানন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নতুন মোড় নিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকে সমর্থন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরান-বিরোধী অবস্থান সৌদি আরবের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রিয়াদ এই উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে চায় না এবং কৌশলগতভাবে তাদের পররাষ্ট্রনীতির ভারসাম্য রক্ষা করতে চাইছে।
ইরান-সৌদি সম্পর্কের ভবিষ্যৎ
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক পুনর্মিলন মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক সমীকরণ পরিবর্তন করতে পারে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি, নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে। তবে এই সম্পর্ক কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করবে ভবিষ্যতের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর।