গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশসমূহ
১. শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক আসামির বিচারে আইন সংশোধন:
একই মামলায় শিশুর সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্ক আসামি থাকলে শিশু আদালত যেন আলাদাভাবে বিচার করতে পারেন, সে জন্য বিদ্যমান আইন সংশোধন করা জরুরি।
২. ভিকটিম ও সাক্ষীর সুরক্ষা:
ভিকটিম, সাক্ষী এবং তাদের পরিবারের সদস্য ও সম্পত্তির সুরক্ষার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করতে হবে।
প্রথমবার সংঘটিত ছোটখাটো অপরাধে প্রবেশন ও জরিমানা:
তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথমবার অপরাধ সংঘটিত হলে আবশ্যিকভাবে প্রবেশন আদেশ বা শুধু জরিমানা আরোপের বিধান যুক্ত করতে হবে।
মোহরানার পরিমাণ নির্ধারণে স্বর্ণের অন্তর্ভুক্তি:
বিয়ের সময় নিকাহনামায় মোহরানার পরিমাণ শুধুমাত্র টাকায় নয়, বরং একই মূল্যের স্বর্ণের পরিমাণ (ক্যারেটসহ) উল্লেখ করতে হবে। পরিশোধের সময় স্বর্ণের মূল্য অনুযায়ী মোহরানার অঙ্ক নির্ধারণ করা হবে।
মোহরানা ধার্যের বিধান সংশোধনের প্রস্তাবনা
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১-এর ধারা ১০ সংশোধন করে মোহরানার পরিমাণ নির্ধারণে টাকার সঙ্গে সমমূল্যের স্বর্ণের পরিমাণ উল্লেখ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
মোহরানা পরিশোধ করা ধর্মীয় দায়িত্ব হওয়ায় এর ক্ষেত্রে তামাদি আইন প্রযোজ্য হবে না।
বিচার ব্যবস্থা ও দণ্ডপ্রদান প্রক্রিয়ায় সংস্কার
শাস্তিসংক্রান্ত শুনানি ও দণ্ড নির্দেশিকা:
বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও দণ্ড প্রদানের ক্ষেত্রে আলাদা শুনানির ব্যবস্থা করতে হবে।
ফৌজদারি কার্যবিধিতে শাস্তি সংক্রান্ত শুনানি পুনঃপ্রবর্তন এবং দণ্ড প্রদানের জন্য পৃথক নির্দেশিকা প্রণয়ন করতে হবে।
সাক্ষী ও ভিকটিমের সুরক্ষা:
দেশে এখন পর্যন্ত সাক্ষীর সুরক্ষা সংক্রান্ত কোনো আইন নেই, ফলে ন্যায়বিচার ব্যাহত হয়।
ভিকটিম ও সাক্ষীর সুরক্ষা, তাদের ক্ষতিপূরণ এবং প্রয়োজনীয় খরচের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন
৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রকাশিত বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
কমিশনের প্রতিবেদনে বিচার ব্যবস্থার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৩১টি অধ্যায়ে সুপারিশ ও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, বিচার ব্যবস্থার কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন আইনের সংশোধন প্রয়োজন।
এই সুপারিশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের বিচারব্যবস্থা আরও কার্যকর হবে এবং নাগরিকদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।