খিলগাঁও: শান্ত গ্রাম থেকে ব্যস্ত নগরী
রাজধানী ঢাকার খিলগাঁও এক সময় ছিল নিভৃত গ্রাম, যেখানে বইত শান্তির সুবাস। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এই এলাকা পরিণত হয়েছে এক কর্মচঞ্চল ও আধুনিক নগরীতে।
খাবারের রাজত্ব
খিলগাঁওয়ের শহীদ বাকি সড়কে রয়েছে ৩০০-রও বেশি খাবারের দোকান। কাচ্চি ভাই, কাবাব স্টেশন, বিএফসি, কেএফসি, সিয়েলো, আপন কফি হাউস ও ডোমিনোজ পিৎজার মতো জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ এখন ভোজনরসিকদের কেন্দ্রবিন্দু। এখানে কফির দাম ৮০ থেকে ৩০০ টাকা, আর ভালো খাবারের জন্য টেবিল পেতে অপেক্ষা করাও স্বাভাবিক।
শিক্ষা ও কর্মসংস্থান
খিলগাঁওয়ের পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে এখানকার ১৯টিরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার পাশাপাশি রেস্তোরাঁ ও ক্যাফেতে খণ্ডকালীন চাকরি করে নিজেদের খরচ চালাচ্ছেন। ফলে, এখানকার রেস্তোরাঁ শিল্পে কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে প্রায় ৮-৯ হাজার মানুষের জন্য।
ব্যবসার প্রসার ও উন্নয়ন
শুধু রেস্তোরাঁ নয়, পোশাক ও প্রসাধনীর দোকানও খিলগাঁওকে একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করেছে। জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হেরলান, ফ্লোরমার ও মুন’স গ্যালারি এখানে তাদের আউটলেট খুলেছে। পাশাপাশি, ইসলাম ব্রাদার্স, সেইলর ও অন্যান্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খিলগাঁওয়ের গুরুত্ব বাড়িয়েছে।
রূপান্তরের বাস্তবতা
এক সময়ের পোশাকশ্রমিকদের বসবাসের এলাকা এখন উচ্চবিত্তের আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ও আবাসন খাতের প্রসারের কারণে বাড়ি ভাড়া ও ব্যবসার খরচও বেড়ে গেছে। ফলে, অনেক ব্যবসায়ী নতুন কৌশল গ্রহণ করছেন বা অন্যত্র সরে যাচ্ছেন।
নতুন চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
ব্যবসা ও আবাসনের প্রসারের পাশাপাশি খিলগাঁওয়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। তবে নিরাপদ খাদ্য ও ব্যবসায়িক নীতিমালা কার্যকরের মাধ্যমে এই এলাকার উন্নয়ন ধরে রাখা সম্ভব।
খিলগাঁওয়ের এ পরিবর্তন শুধু ঢাকা শহরের নয়, বরং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক রূপান্তরের প্রতিচিত্র