বাংলাদেশ সরকারের জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা খাতে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যা প্রতি মাসে গড়ে ১ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকার বেশি। এই ব্যয়ের পরও দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখেনি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় অপরাধের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে ছিনতাই, ডাকাতি, খুন এবং চুরি। রাজধানী ঢাকা এবং অন্যান্য বড় শহরে, এমনকি গ্রামাঞ্চলেও অপরাধীদের হামলার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ এবং পুলিশ সদস্যরা।
বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীর ওপর হামলা এবং মবের শিকার হওয়ার ঘটনাগুলো বেড়েছে। পুলিশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার চেষ্টা সত্ত্বেও অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জনশৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা খাতে ব্যয়ের সাথে সাথে, পরিস্থিতি উন্নত করার জন্য কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন। পুলিশ বাহিনীর মনোবল এবং ইমেজ পুনরুদ্ধার করা জরুরি।
অন্যদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে সরকারের খরচের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই খাতে মোট ব্যয় ছিল ২৫ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা, তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে এই ব্যয় ১০ কোটি টাকা বেড়ে ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনী বছর হওয়ায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা খাতে অতিরিক্ত ব্যয় করা হয়েছিল, তবে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
এছাড়া, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের হামলার শিকার হওয়ার ঘটনা বেড়েছে। বিশেষ করে পণ্য পরিবহনের খাতে চাঁদাবাজি এবং অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে, যা মূল্যস্ফীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বারবার ছিনতাই এবং চুরি ঘটছে, যা জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে।
বিশেষজ্ঞরা এবং রাজনৈতিক নেতারা বলছেন, পুলিশ বাহিনীকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত এবং জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে পুলিশের সংস্কার এখন অপরিহার্য। তাছাড়া, পুলিশের কার্যক্রমের মান বাড়াতে পুরনো কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে আরও কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে।
পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য পুলিশ বাহিনীকে শক্তিশালী করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করার পাশাপাশি, জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের আস্থা ফিরে পেতে পুলিশের মনোবল এবং কার্যক্ষমতা পুনরুদ্ধার করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।