বাংলাদেশে সম্প্রতি একটি পরিকল্পিত ও সংগঠিত উপায়ে ‘মব’ তৈরি করে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের কিছু পক্ষের অদৃশ্য সহায়তা ও পুলিশ বাহিনীর নমনীয়তার সুযোগ নিয়ে অপরাধী গোষ্ঠী এসব ঘটনার মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এমনকি কয়েকটি গোয়েন্দা রিপোর্টেও এই ধরনের তথ্য উঠে এসেছে, যেখানে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা এবং অপরাধী চক্রগুলো ‘মব’ তৈরি করে হামলা, ডাকাতি, লুটপাট ও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে সরকারবিরোধী অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে, ৫ আগস্টের পর থেকে মব ভায়োলেন্সের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে, গত জানুয়ারিতে সঙ্ঘবদ্ধ পিটুনিতে মৃত্যুর সংখ্যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এই ঘটনায় শুধু অপরাধী নয়, অনেক নিরপরাধ মানুষও নিহত হয়েছে। একটি গোয়েন্দা রিপোর্টের মতে, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা, পেশাদার অপরাধী ও বিভিন্ন সুযোগসন্ধানী মহল মিলে ‘মব’ সৃষ্টি করছে। তারা গণপিটুনির মাধ্যমে আইনবহির্ভূত বিচার প্রতিষ্ঠা করে অপরাধীদের শাস্তি দিতে চায়, যদিও এটি কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং সরকারের সদিচ্ছার অভাবে এসব অপরাধী গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে মব তৈরি করে আক্রমণ করছে। এমনকি বিদেশী নাগরিকরা এবং সাধারণ মানুষও এই ভায়োলেন্সের শিকার হচ্ছেন। ৫ আগস্টের পর থেকেই এমন সহিংসতার ঘটনা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতি সমাজের নিরাপত্তা ও আইনের শাসনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, যার ফলে সাধারণ মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) এনামুর রহমান সাগর জানিয়েছেন, মব জাস্টিস কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি আরও জানান, পুলিশের দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপের মাধ্যমে এসব অপরাধী চক্রকে দমন করা হবে।