পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় গত ৭ মার্চ বনশ্রীতে এক স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া আমিনুল ইসলাম, স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা এবং পেশাদার ডাকাত হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে এবং আগেও তাকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সম্প্রতি তার নেতৃত্বে একটি আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্যরা সক্রিয় ছিলেন, যারা বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি করে আসছিল। স্থানীয় গণমাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী, আমিনুল ইসলাম এবং সুমন মোল্লা নামে এক আরেক ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়, যারা বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা। সুমন মোল্লা, স্থানীয় শ্রমিক দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক হিসেবে পরিচিত।
এলাকাবাসী জানায়, আমিনুল ইসলাম ছাত্রলীগের সদস্য হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ডাকাতির নেতৃত্বও দিয়েছেন। তার আগের একটি ডাকাতি মামলায় পুলিশ ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। ওই সময় আমিনুলসহ সাতজন ডাকাতকে আটক করা হয়, এবং তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও ডাকাতির মালামাল উদ্ধার করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, তিনি ডাকাত দলকে আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং অস্ত্রের জোগানও দিতেন। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত করার অভিযোগও রয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর, আমিনুলের ছবি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে তাকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাদের সঙ্গে দেখা যায়। তার সম্পর্কের কারণে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তবে বাউফল উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক হাসান মাহমুদ মঞ্জু জানান, আমিনুল ব্যক্তিগতভাবে তার পরিচিত নয়, তবে তাঁকে দলের কমিটি থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আমিনুল ইসলাম পেশাদার ডাকাত এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গত ৭ মার্চ, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, পিরোজপুর এবং মাদারীপুরে একযোগে অভিযান চালিয়ে পুলিশ আরও ডাকাতদের গ্রেপ্তার করেছে। অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ৪ ভরি ৯ আনা স্বর্ণ, নগদ ২ লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা, একটি রিভলবার, ৪ রাউন্ড গুলি এবং একটি মোটরসাইকেল।
এ ঘটনাটি স্থানীয় রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে, এবং জনগণ দাবি করছে যে, অপরাধী যেই হোক, তাকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।