Saturday, April 19, 2025
spot_imgspot_img
Homeবিশেষ সংবাদড. ইউনূসের মতে, ভারতের সাহায্যে শেখ হাসিনার প্রচারণা ঝুঁকিপূর্ণ।

ড. ইউনূসের মতে, ভারতের সাহায্যে শেখ হাসিনার প্রচারণা ঝুঁকিপূর্ণ।

বাংলাদেশের নতুন যাত্রা: ড. ইউনূসের নেতৃত্বে পরিবর্তনের হাওয়া

গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নতুন যুগে প্রবেশ করেছে, যেখানে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে বিচারবহির্ভূত হত্যার বিচার প্রক্রিয়াও চালু হয়েছে, যা দেশের ন্যায়বিচার ব্যবস্থার প্রতি নতুন আস্থা তৈরি করছে।

সম্প্রতি ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এ সাংবাদিক হান্না এলিস-পিটারসেনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন যে শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল। তার মতে, “হাসিনার শাসন কোনো সরকার ছিল না, বরং এটি ছিল দস্যু পরিবারের শাসন। এখানে বসের আদেশই আইন ছিল, এবং যে কেউ এর বিরোধিতা করলেই তাকে গুম করা হতো।”

ড. ইউনূস আরও বলেন, “বাংলাদেশে তখন প্রতিষ্ঠান, নৈতিকতা, জনগণের অধিকার এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এটি ছিল আরেকটি গাজার মতো বিধ্বস্ত দেশ, তবে পার্থক্য শুধু এটাই যে এখানে ভবন ধ্বংস হয়নি, বরং ধ্বংস হয়েছে দেশের মৌলিক কাঠামো।”

অর্থনৈতিক লুটপাট ও ক্ষমতার অপব্যবহার

ড. ইউনূস অভিযোগ করেন যে, শেখ হাসিনার আমলে সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে ব্যাংকগুলো থেকে জনগণের টাকা লুট করা হতো। কর্মকর্তাদের বন্দুকের ভয় দেখিয়ে কাগজপত্রে স্বাক্ষর করানো হতো এবং নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে মিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়া হতো, যা ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন হতো না। এসব অপকর্মের কারণে অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ প্রভাব পড়েছিল।

ভারত ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি

ড. ইউনূসের মতে, শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, যা দেশের স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। তিনি বলেন, “ভারত তাকে আশ্রয় দিতে পারে, এটি তাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু ভারতকে ব্যবহার করে নতুন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার প্রচেষ্টা অত্যন্ত বিপজ্জনক।”

এছাড়াও, তিনি উল্লেখ করেন যে তার জন্য ভারতই একমাত্র চ্যালেঞ্জ নয়। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিও বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ট্রাম্প একজন ডিলমেকার। বাংলাদেশকে তিনি বিনিয়োগের ভালো সুযোগ ও বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে দেখতে পারেন। আমাদের সঙ্গে চুক্তি করুন, নতুবা বাংলাদেশ কিছুটা কষ্ট পাবে, তবে আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থামবে না।”

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ: আশার আলো

দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী ড. ইউনূস বলেন, “আমরা একটি গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছি। দুর্নীতি ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব। আমাদের লক্ষ্য হলো একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে।”

এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিকল্পনার মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি উন্নত ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments