গার্ডিয়ানকে ড. ইউনূস: “গত ১৫ বছর ছিল দস্যু পরিবারের শাসন”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ কোনও সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়নি, বরং এটি ছিল একটি দস্যু পরিবারের শাসন। তিনি দাবি করেন, সরকারের প্রতিটি আদেশ ছিল একচ্ছত্র এবং কোনও বাধা ছাড়াই কার্যকর করা হতো।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এ সোমবার (১০ মার্চ) প্রকাশিত এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশকে গাজার সঙ্গে তুলনা
ড. ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল। তিনি মন্তব্য করেন,
“তিনি (শেখ হাসিনা) যে ক্ষতি করেছেন, তা ভয়াবহ। এটি ছিল আরেকটি গাজার মতো, যেখানে ভবন নয়, বরং ধ্বংস হয়েছে প্রতিষ্ঠান, নৈতিকতা, জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক।”
ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ
ড. ইউনূস আরও অভিযোগ করেন,
“শেখ হাসিনার শাসন ছিল দস্যু পরিবারের মতো। বস যা চাইতেন, তাই হতো। কেউ প্রতিবাদ করলে গুম করা হতো। নির্বাচন করতে চাইলে তাকে জয়ী হওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হতো। ঋণ চাইলে ব্যাংক থেকে মিলিয়ন ডলার দেওয়া হতো, যা ফেরত দিতে হতো না।”
তিনি আরও বলেন,
“সরকারি অনুমোদনে ব্যাংক লুট করা হয়েছে। বন্দুকের ভয় দেখিয়ে কর্মকর্তাদের জোর করে স্বাক্ষর করানো হতো।”
ভারতকে ব্যবহার করে নতুন বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগ
ড. ইউনূস অভিযোগ করেন,
“ভারতে আশ্রয় নিয়ে শেখ হাসিনা নতুন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। ভারত তাকে আশ্রয় দিতে পারে, তবে ভারতকে ব্যবহার করে আমাদের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করা বিপজ্জনক এবং এটি দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে।”
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন নিয়ে মতামত
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে ফিরে আসাও ড. ইউনূসের জন্য সুসংবাদ নয়। তবে, তিনি মনে করেন যে,
“ট্রাম্প একজন ডিলমেকার। আমি তাকে বলছি, আমাদের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে আসুন। যদি তিনি রাজি না হন, তাহলে বাংলাদেশ কিছুটা কষ্ট পাবে, কিন্তু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থামবে না।”
সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে।