১৮০০ কিডনি প্রতিস্থাপনের রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন ডা. কামরুল ইসলাম
বাংলাদেশের কিডনি চিকিৎসায় এক অনন্য নাম অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম, যিনি সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বিনামূল্যে কিডনি প্রতিস্থাপন করে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী এই চিকিৎসক আগামীকাল শুক্রবার ১৮০০তম কিডনি প্রতিস্থাপনের রেকর্ড গড়তে চলেছেন।
কিডনি প্রতিস্থাপনের চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ
বিশ্ব কিডনি দিবসে ডা. কামরুল ইসলাম জানান, দেশে প্রতি বছর অন্তত ১০ হাজার মানুষের কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়, কিন্তু মাত্র ৩.৬৫ শতাংশ রোগীর প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়। দক্ষ জনবলের অভাব, উচ্চ ওষুধ খরচ, আইনি জটিলতা এবং ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট নিয়ে জনসচেতনতার ঘাটতির কারণে কিডনি প্রতিস্থাপনের হার আশানুরূপ নয়।
প্রতিস্থাপনের সাফল্য ও সংক্রমণের ঝুঁকি
গবেষণা অনুযায়ী, কিডনি প্রতিস্থাপিত রোগীদের মধ্যে এক বছর পর ৯৬ শতাংশ, তিন বছর পর ৮৫ শতাংশ, পাঁচ বছর পর ৭৫ শতাংশ এবং ১০ বছর পর প্রায় অর্ধেক রোগী সংক্রমণের কারণে মারা যান। অথচ তাদের কিডনি কার্যকর অবস্থায় ছিল। ডা. কামরুলের মতে, প্রতিস্থাপনের পর রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ফলে সামান্য সংক্রমণও বিপজ্জনক হতে পারে।
কিডনি চিকিৎসায় ভবিষ্যৎ করণীয়
কিডনি প্রতিস্থাপন কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণ করতে হলে ক্যাডাভেরিক অঙ্গদান সচেতনতা বাড়াতে হবে, সরকারের অর্থ বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবং দক্ষ জনবল তৈরি করতে হবে। ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে ক্যাডাভেরিক অঙ্গ প্রতিস্থাপনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন ডা. কামরুল ইসলাম।
উপসংহার
বর্তমানে দেশে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ কিডনি রোগী রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪০ হাজার রোগী নিয়মিত ডায়ালাইসিসের ওপর নির্ভরশীল। এখন পর্যন্ত দেশে মাত্র ৩৫০০ কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। এই বাস্তবতায় অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলামের অবদান অনস্বীকার্য, এবং তাঁর প্রচেষ্টা কিডনি রোগীদের জন্য এক আশার আলো হয়ে উঠেছে।