গণপরিষদ নির্বাচন নিয়ে নতুন বিতর্কে এনসিপি ও বিএনপি
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের আলোচনায় এসেছে গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়নের ইস্যু। নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের আত্মপ্রকাশের পর থেকেই এই দাবি তুলেছে। দলটির নেতারা মনে করেন, ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরতন্ত্রের পুনরাবৃত্তি রোধ এবং শাসন কাঠামোর আমূল পরিবর্তনের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন। তাদের মতে, এই গণপরিষদ নতুন সংবিধান তৈরি করবে এবং পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ওই সংবিধানের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপির বিরোধিতা
তবে বিএনপি এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করছে। দলটি মনে করে, গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পিছিয়ে যেতে পারে, যা বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধানকে আরও জটিল করে তুলবে। বিএনপি নেতারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাদের অগ্রাধিকার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দ্রুত সম্পন্ন করা।
গণপরিষদ ও সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে করার প্রস্তাব
এনসিপির নেতারা দাবি করছেন, গণপরিষদ ও সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে করা সম্ভব। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান কার্যকর করে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে গতিশীল করা যাবে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক ঐকমত্য থাকলে গণপরিষদ নির্বাচন দুইভাবে করা যেতে পারে—একটি সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে, অথবা মনোনীত প্রতিনিধি নিয়ে। এই পরিষদের সদস্য সংখ্যা ৫০০ থেকে ৫৫০ জন হতে পারে এবং তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংবিধান প্রণয়ন করবেন।
গণপরিষদ নির্বাচনের উপকারিতা
এনসিপির নেতাদের মতে, গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণীত হলে দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে, নাগরিক অধিকার রক্ষিত হবে এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দূর হবে। তবে বিএনপি এটিকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে এবং মনে করছে, এটি শুধুমাত্র বিদ্যমান রাজনৈতিক কাঠামো পরিবর্তনের চেষ্টা।
রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধের কারণে গণপরিষদ ও সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে এনসিপি স্পষ্ট করেছে, তারা তাদের দাবিতে অনড় থাকবে এবং এই বিষয়টি জাতীয় ইস্যু হিসেবে তুলতে থাকবে। অন্যদিকে, বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দল সংবিধান পরিবর্তনের প্রস্তাবকে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে।