জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যে নতুন সংযোজন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এই দলটি ২০২৩ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের মাধ্যমে গঠিত হয় এবং তাদের আদর্শ হিসেবে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও মধ্যপন্থি রাজনীতি গ্রহণ করার ঘোষণা দেয়। এনসিপি তাদের কার্যক্রমে ধর্মনিরপেক্ষতার পরিবর্তে সমাজে ধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা করতে চায়। দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এনসিপি বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতির পক্ষে অবস্থান নিয়ে কাজ করবে এবং সব ধর্মের মানুষের অধিকার সুরক্ষিত রাখবে।
এনসিপি তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে সংগঠন বিস্তৃত করতে কাজ করছে। দলের সদস্য সচিব জানান, তারা উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে সংগঠক নিয়োগ করেছেন এবং শিগগিরই প্রাথমিক সদস্য ফরম প্রকাশ করবে, যার মাধ্যমে নতুন সদস্যরা দলে যোগ দিতে পারবেন। দলটি নিবন্ধন প্রক্রিয়া পূরণ করতে তৎপর, এবং এই প্রক্রিয়ার মধ্যে ২১টি জেলা ও ১০০টি উপজেলায় কমিটি অফিস স্থাপন করার শর্ত রয়েছে। দলটি মনে করে, এই শর্তগুলো পূরণ করা তাদের পক্ষে সহজ হবে কারণ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইতোমধ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির (জানাক) কার্যক্রম চলছে।
এনসিপি গণতান্ত্রিক শর্তাবলী অনুযায়ী নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালাতে চায়, তবে দলের দাবি, বর্তমান আইনে কিছু শর্ত গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন। দলটি দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়। তাদের লক্ষ্য হলো, বাংলাদেশে এক শক্তিশালী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র গঠন করা যেখানে সব মানুষের সমান অধিকার থাকবে।
এনসিপি রাজনৈতিক আদর্শ হিসেবে মধ্যপন্থি রাজনীতির চর্চা করতে চায়। তারা মনে করে, বাংলাদেশের রাজনীতি বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত: ডানপন্থী ও বামপন্থী। এনসিপি এই দ্বিমুখী রাজনীতির বাইরে গিয়ে একটি মধ্যপন্থি দল হিসেবে কাজ করতে চায়, যেখানে সমাজের সব শ্রেণি এবং ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষের জন্য সমান সুযোগ থাকবে। দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, এনসিপি ধর্মীয় উগ্রতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে এবং মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করবে।
দলটি তাদের দলের আদর্শ হিসেবে ধর্মীয় সম্প্রীতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে এবং ঘোষণা করেছে, তারা বাংলাদেশে এক শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে। তবে দলের মুখপাত্র আখতার হোসেন স্পষ্ট করে বলেছেন, এনসিপি ধর্মীয় সম্প্রীতির ভিত্তিতে রাজনীতি করবে, যেখানে সব ধর্মের মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষিত থাকবে।
এনসিপি দেশজুড়ে আরও কার্যক্রম চালানোর জন্য প্রস্তুত, এবং তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন দিশা দেখানো। দলের নেতারা তাদের কাজের মাধ্যমে জনগণের জন্য একটি উন্নত, সমৃদ্ধ এবং শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গঠন করতে চান।