বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতীয় নিরাপত্তা নীতির জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জের সূচনা হচ্ছে, যা বাংলাদেশের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত। চীনের সাহায্যে বাংলাদেশ এখন নতুন একটি সামরিক শক্তি তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছে, যা ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সম্প্রতি চীনের রাষ্ট্রদূত ঢাকায় সফর করে বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সাথে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। এসব বৈঠক শুধু সৌজন্যমূলক নয়, বরং সামরিক কৌশল ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক কৌশলগত পরিবর্তন হতে পারে।
২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশ তার সামরিক অস্ত্রের ৭২ শতাংশই চীন থেকে আমদানি করেছে, যা পাকিস্তানের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম পরিমাণ। তবে, এটি শুধু অস্ত্র আমদানি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নেই; বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে সামরিক প্রযুক্তি গ্রহণও করছে। এটি বাংলাদেশের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যেহেতু এটি নিজেদের অস্ত্র উৎপাদন শুরু করার সুযোগ তৈরি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সামরিক প্রযুক্তির সাহায্যে বাংলাদেশ সামরিক ক্ষেত্রে আরও স্বতন্ত্র হতে পারে এবং নিজস্ব সামরিক নীতি গ্রহণ করতে সক্ষম হবে।
এই সামরিক সম্পর্কের ফলে বাংলাদেশ যদি চীনের সহায়তায় নিজের অস্ত্র উৎপাদন শুরু করে, তবে তা ভারতের জন্য ব্যাপক উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। কারণ এতে ভারতের উত্তর ও পূর্ব সীমান্তে চীনের প্রভাব আরও দৃঢ় হতে পারে এবং দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তিত হতে পারে। ইতোমধ্যেই ভারতের সেনাপ্রধান মন্তব্য করেছেন, “চীনের প্রভাব দ্রুত বাড়ছে এবং এটি আমাদের নিরাপত্তার জন্য একটি হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।”
এছাড়া, পাকিস্তান ইতোমধ্যে চীন থেকে তার সামরিক সরঞ্জামের ৮১ শতাংশ আমদানি করছে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। বাংলাদেশ যদি চীনের প্রযুক্তি ও অস্ত্রের সহায়তা নিয়ে নিজস্ব সামরিক উৎপাদন শুরু করে, তবে ভারতকে তার প্রতিরক্ষা নীতিতে নতুন করে হিসাব করতে হবে। এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত ভারসাম্য পরিবর্তিত হতে পারে এবং ভারতকে নতুন প্রতিরক্ষা নীতি গ্রহণ করতে বাধ্য করতে পারে, যা বৃহত্তর ভূরাজনৈতিক প্রভাব ফেলবে।
এই সামরিক সম্পর্কের পরিবর্তন ভারতের জন্য নতুন প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা গ্রহণের বাধ্যবাধকতা তৈরি করতে পারে, এবং দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে তা একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নেবে।