চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্তত ৮০ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানির প্রয়োজন হবে, যার মধ্যে প্রায় ৬৮ লাখ টন গম এবং ১৫ লাখ টন চাল আমদানি করতে হবে। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশে গমের অভাব রয়েছে, আর বন্যার কারণে চাল উৎপাদনেও ক্ষতি হয়েছে। গত মার্চ পর্যন্ত আমদানির পরিমাণ ৪৮ লাখ টন হলেও, আগামী তিন মাসে আরও ৩২ লাখ টন আমদানি করতে হবে। এ অনুযায়ী, মাসে গড়ে ১০ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানির প্রয়োজন রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাদ্যশস্যের উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে স্থিতিশীলতা রাখতে এবং সরকারের খাদ্যভিত্তিক সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি নির্বিঘ্ন রাখতে এই পরিমাণ আমদানির বিকল্প নেই। বন্যার পর বাংলাদেশের আমন উৎপাদন কমে যাওয়ায় চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মিল মালিকরা কৃত্রিম সংকট তৈরির মাধ্যমে বাজারে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। যদি আমদানি বাড়ানো না হয়, তবে চালের দাম আরও বাড়তে পারে।
বর্তমানে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চালের দাম বেড়ে গেছে। সরু চালের কেজি বর্তমানে ৮৫ টাকা, মাঝারি মানের চাল ৬৫ টাকা, আর মোটা চাল ৫৫ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ১৭ মার্চ পর্যন্ত ৪৮ লাখ ৭৬ হাজার টন খাদ্যশস্য আমদানি হয়েছে, যার মধ্যে ৬ লাখ ৩৪ হাজার টন ছিল চাল এবং ৪৩ লাখ ৪২ হাজার টন গম। তবে, সরকারের চালের মজুদ পর্যাপ্ত নয় এবং চালের আমদানির পরিমাণও লক্ষ্য মাত্রার তুলনায় কম।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে চালের বাজারে সংকট তৈরি হচ্ছে। যদি আমদানি বাড়ানো না হয়, তবে বাজার আরও অস্থিতিশীল হতে পারে। কৃষি অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, সরকার দ্রুত ৫-৬ লাখ টন চাল আমদানি না করলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠবে। এর পাশাপাশি, বোরো মৌসুমে উৎপাদন ভালো হলে চালের দাম কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, খাদ্যশস্যের আমদানির পরিমাণ না বাড়ানো হলে, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হতে পারে।