ঢাকায় ফুটপাতে চাঁদাবাজি: নতুন চেহারায় ফিরেছে পুরোনো চক্র
ঢাকার ফুটপাতের চাঁদাবাজি কার্যক্রম গণঅভ্যুত্থানের পর সাময়িকভাবে থমকে গিয়েছিল, কিন্তু আবার পুরোনো রূপে ফিরে এসেছে। বর্তমানে ফুটপাতে হকারদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কিছু ক্ষেত্রে চাঁদার পরিমাণও বেড়েছে। আগের চেয়ে নতুন চাঁদাবাজির হোতারা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বেশ কিছু এলাকাতে বিএনপি নেতাদের নাম চাঁদাবাজির তালিকায় উঠে এসেছে, যা সরকারের বদলিকে ইঙ্গিত করে।
২০১৬ সালে গুলিস্তানে হকার উচ্ছেদে ঢাকার দক্ষিণ মেয়র সাঈদ খোকনের উদ্যোগ সফল হয়নি। পরবর্তীতে ব্যারিস্টার তাপসের মেয়র হওয়ার পরও ফুটপাত থেকে হকারদের উচ্ছেদ কার্যক্রম তেমন ফলপ্রসূ হয়নি। গণঅভ্যুত্থানের পর কিছু সময় ফুটপাত থেকে দোকান উচ্ছেদ করা হলেও আবার সেসব জায়গায় দোকান বসেছে।
২০১৬ সালে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় ৩ লাখ হকার ১৮২৫ কোটি টাকার চাঁদা দেয়। এসব হকাররা প্রতিদিন ৫০ থেকে ৫০০ টাকা চাঁদা দেন। ২০২০ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা রিপোর্টে জানা যায়, প্রতিটি দোকান থেকে গড়ে ১৯২ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়।
দায়িত্বে থাকা সন্ত্রাসীরা পুরনো জায়গা দখল করে নিয়েছেন এবং তাদের হয়ে রাজনৈতিক কর্মীরা চাঁদাবাজি করছেন। এসব এলাকায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম উঠে এসেছে, যারা দোকান বসাতে টাকা আদায় করেন। এসব এলাকায় নতুন ব্যবসায়ী এবং পুরোনো দোকানদারদের জন্য চাঁদা দিতেই হয়।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও পুলিশ প্রশাসন হকার উচ্ছেদে কঠোর পদক্ষেপ নিতে চাইলেও চাঁদাবাজি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। ফুটপাতে হকার উচ্ছেদে সবার সমন্বয় প্রয়োজন, কারণ এক জায়গায় উচ্ছেদ করলে অন্য জায়গায় নতুন দোকান বসে যাচ্ছে।
ফুটপাতের চাঁদাবাজি বিষয়ে এখনো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপের অভাব রয়েছে। যদিও কিছু উন্নতি দেখা গেলেও, চাঁদাবাজির মহামারি থামানো সম্ভব হয়নি।