প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চলতি সপ্তাহে চীন সফরে যাচ্ছেন। এই সফর বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এবং এটি আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন এবং ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মাঝে বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। বাংলাদেশ এই সফরের মাধ্যমে চীন থেকে আরও বিনিয়োগ আকর্ষণ, বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করা এবং বিশেষভাবে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। এই সফরের একটি প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণ করা। বাংলাদেশ চায় চীনা কোম্পানিগুলো তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর করুক এবং বাংলাদেশের অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশের সুবিধা গ্রহণ করুক। এছাড়া, বাংলাদেশ চীনের বিশাল বাজারে প্রবেশের জন্য রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণের গুরুত্ব তুলে ধরেছে।
স্বাস্থ্যসেবা, পানি ব্যবস্থাপনা ও তিস্তা নদী ইস্যু সম্পর্কেও চীনের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। বাংলাদেশ চায় চীনের সাহায্যে আধুনিক হাসপাতাল স্থাপন এবং নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে সহযোগিতা বাড়াতে। বিশেষ করে, তিস্তা নদী সংক্রান্ত বিষয়েও চীনের সহযোগিতা কামনা করছে বাংলাদেশ।
এই সফরের কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে, কারণ বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের পাশাপাশি আঞ্চলিক ভূরাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে এটি ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রধান উপদেষ্টার সফর বাংলাদেশের চীন সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান গতিশীলতার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতে দুটি দেশের মধ্যে গভীরতর সহযোগিতার সুযোগ তৈরি করবে।
সফরের সময়, ড. ইউনূস বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং চীনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন। চীন সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার পথ প্রশস্ত করবে।