বাংলাদেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান যদি কোনো কারণে দেউলিয়া হয়ে যায়, তাহলে আমানতকারীরা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত বিমা সুরক্ষা পাবেন। এই নতুন সুরক্ষা ব্যবস্থা ‘ক্ষতিপূরণ’ হিসেবে প্রদান করা হবে, যা আগে এক লাখ টাকা ছিল। সম্প্রতি সরকার ‘আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নামে একটি নতুন অধ্যাদেশ প্রবর্তনের খসড়া তৈরি করেছে এবং জনগণের কাছ থেকে মতামত চাওয়া হচ্ছে। এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য ব্যাংক আমানতকারীদের জন্য সুরক্ষা বৃদ্ধি করা এবং দেউলিয়া পরিস্থিতিতে তাদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা।
বর্তমানে বাংলাদেশে ১৫ কোটি ৭১ লাখ ব্যাংক হিসাব রয়েছে, যার মধ্যে ৯৫% হিসাবের আমানতের পরিমাণ দুই লাখ টাকা বা তার কম। এর মানে, নতুন অধ্যাদেশ পাস হলে অধিকাংশ আমানতকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। তবে যারা বড় অঙ্কের টাকা জমা রেখেছেন, তাদের জন্য সুরক্ষা সীমিত থাকবে। ব্যাংক দেউলিয়া হলে বড় আমানতকারীরা সুরক্ষিত হবেন না, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে শেয়ার দিয়ে বা অন্য কোনো উপায়ে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া থাকতে পারে।
নতুন অধ্যাদেশে ‘আমানত সুরক্ষা তহবিল’ গঠনের কথা বলা হয়েছে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিচালনা করবে। এই তহবিলের অর্থই আমানতকারীদের সুরক্ষা প্রদান করবে। তাছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংক একটি আলাদা বিভাগও গঠন করবে, যা আমানত সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। সরকার, সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি সংস্থাগুলোর আমানতগুলি এই অধ্যাদেশের আওতামুক্ত থাকবে।
এছাড়া, নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রিমিয়াম পরিশোধে বিলম্ব হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে। এটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করবে, যাতে তারা নিয়মিতভাবে প্রিমিয়াম পরিশোধ করে এবং আমানতকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে। ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, নতুন সুরক্ষা ব্যবস্থা আমানতকারীদের জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ, এবং ভবিষ্যতে এর পরিমাণ আরও বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।