লেবাননের কেউই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক চায় না: প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, দেশটির কেউই ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় না। তেহরান টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ইসরায়েলি দখল ও লেবাননের অবস্থান
প্রধানমন্ত্রী সালাম বলেন, ইসরায়েল এখনো লেবাননের পাঁচটি সীমান্ত এলাকা দখল করে রেখেছে। ২০২৩ সালে হিজবুল্লাহর হুমকি মোকাবিলার অজুহাতে দক্ষিণ লেবাননে প্রবেশ করেছিল তারা।
যদিও গত নভেম্বরে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, ২৬ জানুয়ারির মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীকে দক্ষিণ লেবানন ছাড়তে বলা হয়েছিল, কিন্তু তারা এখনও সেই দখল অব্যাহত রেখেছে। তার মতে, এসব এলাকা সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি ইসরায়েলের লেবাননের ওপর চাপ বজায় রাখার কৌশল মাত্র।
ইসরায়েলের হামলা ও ক্ষয়ক্ষতি
যুদ্ধবিরতি চুক্তি থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল বারবার দক্ষিণ লেবাননে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। লেবাননের স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, গত এক বছরে ইসরায়েলি হামলায় চার হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে লেবাননের প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলি গণমাধ্যম দাবি করেছে, মার্কিন প্রশাসনের সহায়তায় লেবাননের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে ইসরায়েল। তবে লেবাননের পার্লামেন্ট স্পিকার নাবিহ বেরি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ইসরায়েল কূটনৈতিক আলোচনা চাইলেও লেবানন সেটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য মনে করে না।
ফ্রান্সের উদ্যোগ ও লেবাননের পুনর্গঠন
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত জ্যাঁ-ইভ লে দ্রিয়ান বৈরুতে সফর করেছেন এবং লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন ও প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালামের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। আলোচনার মূল বিষয় ছিল লেবাননের যুদ্ধবিধ্বস্ত অংশগুলোর পুনর্গঠন।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে প্যারিসে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে লেবাননের মানবিক সহায়তার জন্য ১ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা হয়। তবে বিশ্ব ব্যাংকের হিসাবে, দেশটির পুনর্গঠন ও উন্নয়নের জন্য অন্তত ১১ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।
ফ্রান্সের সহযোগিতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ফ্রান্স আগামী মাসগুলোতে আরও তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নেবে। এরই মধ্যে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ লেবাননের পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং জানুয়ারিতে নতুন সরকার গঠনের পর বৈরুত সফর করেছেন।
এ সপ্তাহের শেষের দিকে লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন ফ্রান্স সফরে যাবেন, যেখানে আরও অর্থায়ন ও কূটনৈতিক আলোচনার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।