Saturday, April 19, 2025
spot_imgspot_img
Homeজাতীয়"স্বাধীন পরিবেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপন ও নির্বাচন ইস্যুতে সক্রিয় বিএনপি"

“স্বাধীন পরিবেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপন ও নির্বাচন ইস্যুতে সক্রিয় বিএনপি”

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফিরেছে স্বস্তি ও গণতান্ত্রিক চর্চার আবহ। এই নতুন বাস্তবতায় দীর্ঘ ১৬ বছর পর এক মুক্ত ও ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে যাচ্ছে বিএনপি। দিনটিকে উৎসবমুখর করতে দলটি বৃহৎ পরিসরে বৈশাখী কর্মসূচির আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দেশীয় সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে রাজধানী থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বৈশাখী র‌্যালি, মেলা এবং নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন করবে দলটি। সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে দলটির অবস্থান স্পষ্ট করতে এবং আগাম করণীয় নির্ধারণ করতে শিগগিরই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আবারও বৈঠকে বসবে বিএনপি। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলেই এই সাক্ষাৎ হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।অন্যদিকে, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি। দলটি দ্রুত এই নির্মমতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ঢাকায় একটি বৃহৎ প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল জানান, বৈশাখে দলের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী র‌্যালি, পান্তা-ইলিশ পরিবেশন, লোকজ সংগীত, গ্রামীণ মেলা ও হাডুডু খেলার মতো বর্ণাঢ্য আয়োজন থাকবে। তবে ১৫ এপ্রিল এসএসসি পরীক্ষা থাকায় বৈশাখের দিন সন্ধ্যার আগেই সব আয়োজন শেষ করতে বলা হয়েছে। ১৬ এপ্রিলেও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি চলবে।এছাড়াও, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে নির্বাচনি রোডম্যাপ ও প্রয়োজনীয় সংস্কার নিয়ে গভীর আলোচনা হয়। দলটি মনে করে, নির্বাচনকালীন সংস্কারগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন এবং চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া উচিত।বিএনপি মনে করে, সরকার চাইলে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে জরুরি সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারে। আর বাকি সংস্কারগুলো পরবর্তী নির্বাচিত সংসদে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।তবে সরকারের দেওয়া নির্বাচনকালীন সময়সীমা—চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত—বিএনপির কাছে অস্পষ্ট মনে হচ্ছে। তাই তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি নির্ভরযোগ্য রোডম্যাপ জানতে চায়।স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সরকারকে সহযোগিতা করার নীতিতে অটল থেকেও নির্বাচনি সংস্কার ও রোডম্যাপ নিয়ে দলটি তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করবে। দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের সংকট উত্তরণের সম্ভাবনা দেখছে বিএনপি।এদিকে, ইসরায়েলি নৃশংসতার প্রতিবাদে ইতোমধ্যে বিএনপির অঙ্গসংগঠনগুলো কর্মসূচি পালন করেছে। এবার দলীয়ভাবেও কেন্দ্রীয় কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। চলতি সপ্তাহেই ঢাকায় একটি বৃহৎ বিক্ষোভ কর্মসূচির সম্ভাবনা রয়েছে। একইসঙ্গে আগামী শনিবার অনুষ্ঠিতব্য ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করবে দলটি।এই কর্মসূচি শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউতে গিয়ে শেষ হবে বলে জানা গেছে। বিএনপির নেতারা এতে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা—ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান (অনলাইনে), নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (অনলাইনে), আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু (অনলাইনে), মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন (অনলাইনে)।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments