বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে আগামীকাল সোমবার (১৪ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে আয়োজিত হচ্ছে নানামুখী সাংস্কৃতিক আয়োজন ও বর্ণিল বর্ষবরণ শোভাযাত্রা। “নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান” এই মূল প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হবে ঐতিহ্যবাহী ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’।
ঢাবির জনসংযোগ দফতর থেকে রোববার (১৩ এপ্রিল) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শোভাযাত্রার প্রস্তুতি শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে। চারুকলা থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি শাহবাগ, টিএসসি, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর ঘুরে আবার চারুকলায় গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য শুধুমাত্র নীলক্ষেত ও পলাশী মোড় দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুমতি থাকবে। অন্যসব প্রবেশপথ ও সংশ্লিষ্ট সড়কসমূহ এই সময় বন্ধ রাখা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উৎসব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। অংশগ্রহণকারীদেরকে পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে, এবং সরাসরি আশপাশ থেকে প্রবেশ না করে শোভাযাত্রার শেষ প্রান্ত থেকে সুশৃঙ্খলভাবে যোগ দেয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঢাবির বর্ষবরণ শোভাযাত্রা বরাবরের মতোই ঐতিহ্য বহন করে। তবে এবার লোকঐতিহ্য ও ২০২৪ সালের সময়চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আরও বড় পরিসরে, বৈচিত্র্যময় ও সর্বজনীনভাবে এ আয়োজনে অংশ নিচ্ছে ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, দেশি-বিদেশি অতিথি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। এবারের শোভাযাত্রায় থাকবে ৭টি বড় মোটিফ, ৭টি মাঝারি মোটিফ এবং ৭টি ছোট মোটিফ।
নববর্ষ উপলক্ষে কিছু নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। যেমন—মুখোশ পরা নিষিদ্ধ, তবে চারুকলা কর্তৃক তৈরি মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রিও নিষিদ্ধ।
শোভাযাত্রার সময় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য রাজু ভাস্কর্যের পেছনের গেইট, ছবির হাটের গেইট এবং রমনা কালীমন্দির সংলগ্ন গেইট বন্ধ থাকবে।
সোমবার নববর্ষের সব আয়োজন বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। ৫টার পর কেউ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না, শুধু বের হওয়া যাবে। রোববার সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। নববর্ষের দিন মোটরসাইকেলসহ কোনো যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। ক্যাম্পাসে বসবাসরত ব্যক্তিরা কেবল নীলক্ষেত এবং পলাশী মোড় সংলগ্ন গেইট দিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন।
উৎসবে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়েও নজর দেওয়া হয়েছে। ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সামনে থাকবে হেল্প ডেস্ক, কন্ট্রোল রুম ও অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প। মোবাইল পাবলিক টয়লেট বসানো হবে মুহসীন হল মাঠ, দোয়েল চত্বর, টিএসসি এবং কার্জন হল সংলগ্ন এলাকায়।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে গেট বসিয়ে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রস্তুত শিক্ষার্থীরা—নতুন সূর্য উঠুক উৎসবের রঙে।