Wednesday, April 16, 2025
spot_imgspot_img
Homeআন্তর্জাতিককরাচির রাজপথে গাজাবাসীর জন্য গর্জন—ফিলিস্তিন সংহতিতে লাখো মানুষের বিক্ষোভ

করাচির রাজপথে গাজাবাসীর জন্য গর্জন—ফিলিস্তিন সংহতিতে লাখো মানুষের বিক্ষোভ

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে নির্মম মানবিক সংকটের মুখোমুখি ফিলিস্তিন। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন হাজার হাজার নিরীহ মানুষ, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী বিবেকবান মানুষেরা সোচ্চার হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের মতো পাকিস্তানেও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে জনস্রোত নেমে এসেছে রাজপথে।

গত রোববার (১৪ এপ্রিল), পাকিস্তানের করাচি শহরের শাহরা-এ-ফয়সল সড়কে আয়োজিত “গাজা সংহতি মার্চ”-এ অংশ নেয় হাজারো মানুষ। ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও গাজাবাসীর প্রতি একাত্মতা প্রকাশের উদ্দেশ্যেই আয়োজিত এই কর্মসূচিতে আয়োজকদের দাবি অনুযায়ী প্রায় এক লাখ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে বিক্ষোভকারীরা হাতে ফিলিস্তিনি পতাকা, হামাস নেতাদের ছবি ও শিশু হত্যার প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে সাদা কাফনে মোড়ানো পুতুল বহন করেন।

এই বিক্ষোভে অংশ নেন নারী, পুরুষ, শিশু, তরুণ, এমনকি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও। মুসলিমদের পাশাপাশি খ্রিস্টান ও হিন্দুদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। অনেকে পরিবারসহ যোগ দেন এই মানবিক প্রতিবাদে। শিক্ষার্থীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বহন করে ১০০ ফুট দীর্ঘ ফিলিস্তিনি পতাকা। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় লেখা ছিল—“গাজায় হামলা বন্ধ করো”, “ইসরায়েল নিপাত যাক” এবং “গাজায় গণহত্যা—মুসলিম বিশ্ব জেগে ওঠো।” স্লোগানে মুখরিত ছিল করাচি: “লাব্বাইক ইয়া গাজা”, “লাব্বাইক ইয়া আকসা”।

জামায়াতে ইসলামির আমির হাফেজ নাঈম-উর-রহমান বলেন, “ফিলিস্তিনিদের নিঃশেষ করা যাবে না। আমরা তাদের পাশে আছি।” বিক্ষোভে উপস্থিত আলি মোস্তাফা, যার হাতে ছিল “মুক্তি না হলে শহীদ” লেখা পোস্টার, বলেন, “পাকিস্তান সবসময় ফিলিস্তিনের পাশে থাকবে।” খ্রিস্টান নেতা ইউনাস সোহান আন্তর্জাতিক পরাশক্তিগুলোর ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, তারা ইসরায়েলের পাশেই অবস্থান নিচ্ছে, যার ফলে নিরীহ মানুষের ওপর হামলা চালানো সম্ভব হচ্ছে।

এদিন জমিয়াতে উলামা ইসলামের একটি সমাবেশও হয়, যেখানে দলটির প্রধান মাওলানা ফজল-উর-রহমান ইসরায়েলকে “সন্ত্রাসী রাষ্ট্র” এবং তার মিত্রদেরকে “যুদ্ধাপরাধে সহায়তাকারী” বলে অভিহিত করেন।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান চলমান রয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, এই সময়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫১ হাজার মানুষ—অধিকাংশই নারী ও শিশু। করাচির এই বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়: বিশ্ব এখনও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে জানে, এবং ফিলিস্তিনিরা একা নয়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments