ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তিন মাসব্যাপী ধারাবাহিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা করছে বিএনপি। দলটি সভা-সমাবেশ, পদযাত্রা ও মিছিলের মতো কর্মসূচির মাধ্যমে সাংগঠনিক প্রস্তুতি জোরদার করতে চায়। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে জেলা, মহানগর ও বিভাগীয় পর্যায়ে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সাংগঠনিক নেতারা এ বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে অবহিত করেছেন।
দলীয় সূত্র জানায়, নির্বাচন ইস্যুতে স্পষ্ট বার্তা না পেলে চলতি মাসের শেষ দিক থেকেই মাঠে নামবে বিএনপি। আজ বুধবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত।
বিএনপি নেতাদের মতে, এই কর্মসূচির লক্ষ্য দ্বিমুখী—একদিকে সাংগঠনিক সক্রিয়তা বৃদ্ধি, অন্যদিকে সরকারের ওপর নির্বাচন আদায়ে জনচাপ সৃষ্টি করা। তারা বলেন, জনগণ নির্বাচন চায়, তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে প্রস্তুত রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বিএনপি জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক বার্তা দিতে চায়—যে জাতি আবারও ভোটে অংশ নিতে প্রস্তুত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ দুপুর ১২টায় যমুনা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করবে একটি প্রতিনিধি দল, যার নেতৃত্বে থাকবেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্টভাবে জানতে চাওয়া হবে।
বিএনপির অভিমত, নির্বাচন কমিশন এবং বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল নির্বাচনমুখী। দরকার কেবল সরকারের সদিচ্ছা। দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং চলমান সংকট কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে বলে দলের বিশ্বাস।
সরকারকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ না জানিয়ে বরং নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে চাপ বজায় রাখতে চায় বিএনপি। দলটি মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করে দেশের স্বার্থেই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ তৈরি করা উচিত। তবে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র এবং দেশের ভিতরে তাদের দোসরদের তৎপরতা ঠেকাতে মাঠে সংগঠিত অবস্থান বজায় রাখতে চায় বিএনপি।
দলটির এক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, “আমরা মাঠে থাকব শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, নির্বাচনের বার্তা নিয়ে। ইউনিয়ন থেকে ঢাকায় বড় সমাবেশ—সব প্রস্তুত হচ্ছে।”
পরিস্থিতি অনুযায়ী এসব কর্মসূচি আগে-পরে শুরুর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না বিএনপি।