গত বছরের জুলাইয়ে গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আরও ১১ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করেছে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। এই আবেদন তিন ধাপে সম্পন্ন হয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে আবেদন করা হয়েছে তারা হলেন—
শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আ ক ম মোজাম্মেল হক, হাছান মাহমুদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শেখ ফজলে নূর তাপস, তারিক আহমেদ সিদ্দিক, নসরুল হামিদ, মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ।
আবেদনে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অপরাধ এবং বাকি ১১ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তোলা হয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আবেদন করা হয়েছে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে, আর বেনজীরের বিরুদ্ধে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে। বাকি দশজনের নামে রেড নোটিশের অনুরোধ পাঠানো হয়েছে ২০২৫ সালের ১০ এপ্রিল।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা চলমান, যার মধ্যে একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ সংশ্লিষ্ট। মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং আগামীকাল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন নির্ধারিত।
এখনও পর্যন্ত ইন্টারপোলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এই ১২ জনের কারোর নাম দেখা যায়নি। পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট মামলাগুলোতে ইন্টারপোল অতিরিক্ত যাচাই-বাছাই করে থাকে, যার ফলে প্রক্রিয়াটি কিছুটা দীর্ঘায়িত হতে পারে। তবে বেনজীর আহমেদের মামলা আর্থিক জালিয়াতির কারণে অপেক্ষাকৃত দ্রুত এগোতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে ফেরত আনতে বাংলাদেশ সরকার দ্বিপাক্ষিক বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছে। যদিও রাজনৈতিক প্রভাব, বিদেশে অবস্থানরত অভিযুক্তদের নাগরিকত্ব বা স্থায়ী অনুমতি, এবং আন্তর্জাতিক লবিংয়ের কারণে প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইন্টারপোলের রেড নোটিশ সরাসরি গ্রেফতারি পরোয়ানা নয়, তবে অভিযুক্তরা কোনো দেশে ভ্রমণের সময় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তাদের আটক করতে পারে।
বাংলাদেশের এনসিবি জানিয়েছে, বিষয়টি এখন ইন্টারপোলের সক্রিয় প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।