সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)-এর সভাপতি এবং হায়দরাবাদের প্রভাবশালী সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি ওয়াকফ আইন সংশোধনের কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, “এই আইন সংবিধানের চেতনাবিরোধী—বাতিল করতেই হবে।”
রোববার (২০ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক ওয়াকফ আইন সংশোধনের প্রতিবাদে ভারতের অন্যতম বৃহৎ মুসলিম সংগঠন অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড হায়দরাবাদে একটি ব্যাপক গণসমাবেশের আয়োজন করে। শনিবার আয়োজিত এই কর্মসূচিতে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন।
সংবিধানের মূল চেতনাবিরোধী বলে উল্লেখ করে ওয়াইসি এই প্রতিবাদকে “ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে একটি জাতীয় ঐক্যের বহিঃপ্রকাশ” হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “দেশের নানা প্রান্ত থেকে বহু সংগঠন এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে। আমরা এই সংহতির জন্য কৃতজ্ঞ।”
তিনি আরও জানান, “যতদিন না এই বিতর্কিত আইন প্রত্যাহার করা হচ্ছে, ততদিন শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চলবে সারা দেশে।”
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ভারতের পার্লামেন্টে ওয়াকফ আইন সংশোধনী বিলটি পাস হয়, যা ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়। সংশোধিত এই আইনের ফলে অ-মুসলিমদের ওয়াকফ বোর্ডে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে, যা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অধিকারকে লঙ্ঘন করে বলে মনে করছেন সমালোচকরা।
ওই প্রতিবেদন আরও জানায়, এই আইন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত তিনজন প্রাণ হারিয়েছেন, যার ফলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এদিকে সুপ্রিম কোর্টে আইনটির বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে এক ডজনেরও বেশি পিটিশন দাখিল হয়েছে। সরকার আদালতকে আশ্বস্ত করেছে যে, মামলার পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ওয়াকফ বোর্ডে অ-মুসলিমদের নিয়োগ স্থগিত থাকবে।
বিরোধীদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও বিলটি সংসদের দুই কক্ষেই পাস হয়ে যায়, যার ফলে হায়দরাবাদ ছাড়িয়ে ভারতের নানা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের আহ্বানে এবং আসাদউদ্দিন ওয়াইসির নেতৃত্বে এই প্রতিবাদ এখন এক সর্বভারতীয় শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলনে রূপ নিচ্ছে।