সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো আলোচনায় বসেছে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। ওমানের পর রোমে গত শনিবার আয়োজিত এই বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির প্রতিনিধিরা অংশ নেন। আলোচনাকে ‘ইতিবাচক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ইরানের কর্মকর্তারা, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে দীর্ঘদিনের উত্তেজনার বরফ গলতে শুরু করেছে।
ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম প্রেস টিভিকে জানান, তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চলমান পরমাণু কর্মসূচি বিষয়ক মধ্যস্থতায় স্পষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। রোমের বৈঠককে তিনি বেশ আশাব্যঞ্জক বলেও মন্তব্য করেন।
বৈঠকের আগে মস্কো সফরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন আরাকচি। ধারণা করা হচ্ছে, সেখান থেকে কৌশলগত দিকনির্দেশনা পেয়েই তিনি দ্বিতীয় দফার আলোচনায় এমন আত্মবিশ্বাসী অবস্থান নিয়েছেন।
দ্বিতীয় দফার আলোচনা কোথায় হবে, তা নিয়ে সপ্তাহজুড়ে জল্পনা চললেও অবশেষে রোমে অনুষ্ঠিত হয় উচ্চপর্যায়ের এই বৈঠক। সেখানে চার ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় অংশ নেন আরাকচি ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ। আলোচনাটি হয় পরোক্ষভাবে, যেখানে একজন ওমানি কর্মকর্তা মধ্যস্থতা করেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, খামেনির পক্ষ থেকে আরাকচিকে পূর্ণ ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে—যাতে তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
বৈঠকে তেহরান জানায়, তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ, আর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে ইরান কর্মসূচির কিছু অংশ সীমিত করতে রাজি। এই আলোচনার পর উভয় পক্ষ একটি সম্ভাব্য পরমাণু চুক্তির কাঠামো গঠনে বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করতে একমত হয়েছে।
আগামী ২৬ এপ্রিল আবারও মুখোমুখি হবেন আরাকচি ও উইটকফ। এর আগে, ওমানে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনার পর সাংবাদিকদের সামনে আরাকচি জানান, ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা নিয়ে তেহরান আত্মবিশ্বাসী এবং নিজেদের অবস্থানকে শক্তিশালী মনে করছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে ছয় জাতির সঙ্গে ইরান একটি পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছেছিল। তবে ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে ওই চুক্তি থেকে বের করে আনেন এবং ইরানের ওপর আরোপ করেন কঠোর নিষেধাজ্ঞা। এবার ফের আলোচনায় ফিরলেও একইসঙ্গে সামরিক হুমকিও বজায় রেখেছেন ট্রাম্প প্রশাসন।